বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, তার দল ক্ষমতায় গেলে দেশের সব ক্ষুদ্র ও সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি ‘রেইনবো নেশন’ গড়ে তুলবে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকায় গারো সম্প্রদায়ের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির এই অবস্থান তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এমন একটি সমাজে প্রতিটি সম্প্রদায়ের সদস্য সমানভাবে অংশগ্রহণ করবে, তাদের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক অবদান স্বীকৃত হবে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০২২ সালে ঘোষিত ৩১ দফার মধ্যে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, আমরা একটি রেইনবো নেশন তৈরি করব। অর্থাৎ একটি সমাজ যেখানে সব সম্প্রদায় সমানভাবে অংশগ্রহণ করবে এবং তাদের অবদানকে সম্মান জানানো হবে। আগামী বিএনপি সরকারের অধীনে এই বিষয়গুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
ফখরুল আরও বলেন, বিএনপির ‘ভিশন-২০৩০’ কর্মসূচিতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ, তাদের সমস্যা সমাধান এবং পৃথক অধিদপ্তর গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, “ঢাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য পৃথক সাংস্কৃতিক একাডেমি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। গারো সম্প্রদায়ের ‘ওয়ানগালা উৎসব’ সরকারি পর্যায়ে উদযাপন ও সমর্থনের অধীনে হবে।”
তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে মূল সমাজের সঙ্গে সংযুক্ত করা। তাদের নাগরিক অধিকার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ নিশ্চিত করা। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান থেকেই বাংলাদেশে সব জাতিগোষ্ঠীর স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি সরকারের দায়িত্ব হবে ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত করা এবং তাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করা। আমাদের লক্ষ্য তাদের মূল সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে এক করা এবং দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক—যিনি বাঙালি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, আদিবাসী বা সংখ্যালঘু—তার স্বীকৃতি পাবে এবং সমাজে সমানভাবে নিজ অবস্থান রাখতে পারবে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো একত্রিত সমাজ গঠন, যেখানে কোনো সম্প্রদায় অবহেলিত থাকবে না।’
সভায় তিনি আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে ঢাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক একাডেমি স্থাপন করা হবে এবং তাদের ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারি পর্যায়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গারো সম্প্রদায়ের শিক্ষাবিষয়ক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নও সরকারের পরিকল্পনার অংশ হবে।



