সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকেই রাজধানীর শাহবাগ, বাংলামোটর ও সায়েন্সল্যাব এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তবে সীমিতভাবে চলছে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল, রিকশা ও অ্যাম্বুলেন্স। এমন পরিস্থিতিতে শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছেন জামায়াতের স্বেচ্ছাসেবকরা।
দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের একজন স্বেচ্ছাসেবক কিবরিয়া বলেন, ‘সকাল থেকে আমাদের প্রায় ৫০ জন কর্মী এখানে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে কাজ করছেন। প্রয়োজন অনুযায়ী সংখ্যাও বাড়ানো হবে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে শাহবাগ মোড় সম্পূর্ণ পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল চালু রাখা যায়। জরুরি সেবার গাড়ি ও রোগীদের চলাচলে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’
খণ্ড খণ্ড মিছিল করে স্লোগান দিতে দিতে সভাস্থলে প্রবেশ করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে কেউ মাথায় গামছা বেঁধে, কেউবা দলের পতাকা হাতে নিয়ে এগিয়ে আসছেন। সমাবেশস্থলে ভিড়ের কারণে অনেকেই মাঠের ভেতরে প্রবেশের আগেই গাছের ছায়ায় বসে খাচ্ছেন বা বিশ্রাম নিচ্ছেন।
দুপুর ২টায় মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও ১০টা থেকেই বক্তব্য রাখছেন জেলা ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা। একইসঙ্গে পরিবেশিত হচ্ছে দলীয় ও ইসলামী সংগীত। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
এদিকে, সমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট গেট ও চেকপোস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। মেডিকেল টিম, পানির ব্যবস্থা, ভলান্টিয়ার টিমসহ সমাবেশ পরিচালনায় একটি শক্তিশালী ব্যবস্থাপনা গঠন করা হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে যখন তীব্র বিতর্ক চলছে, সে সময়ে জামায়াতে ইসলামী ঢাকায় বিশাল সমাবেশ করতে যাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এই সমাবেশে জামায়াত স্মরণকালের সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চাইছে।
সমাবেশে আসা বিপুল পরিমাণ লোকের গাড়ি পার্কিং, অজু-নামাজের ব্যবস্থা এবং টয়লেট স্থাপন, মেডিকেল বুথ স্থাপনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সব প্রস্তুতি শেষ করেছে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটি।
জানা গেছে, এতদিন ঢাকার পুরানা পল্টন, বায়তুল মোকাররম, পল্টন ময়দানসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অতীতে অসংখ্য রাজনৈতিক কর্মসূচি করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কখনোই এককভাবে বড় সমাবেশ করেনি দলটি।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের মধ্যদিয়ে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে গা-ঝাড়া দিয়ে ওঠেন দলটির কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ‘জাতীয় সমাবেশ’ করার মাধ্যমে নিজেদের সাংগঠনিক সক্ষমতা জানান দিতে চাইছে দলটি।
এই সমাবেশে ভিন্ন বা বিশেষ কিছু রয়েছে বলে জানান জামায়াতের নেতারা। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই সমাবেশে ১০ লাখের বেশি মানুষের অংশগ্রহণের প্রত্যাশা করছে দলটি। সমাবেশ থেকে ‘জাতীয় ঐক্য’ ও ‘কল্যাণ রাষ্ট্র’ গঠনের ডাক দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :