বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো পূর্ণ বিচার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা বরকত উল্লাহ।
শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন।
বরকত উল্লাহ বলেন, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে আমার ছেলে আবরার ফাহাদকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে রাতভর নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। তার একমাত্র অপরাধ ছিল, সে দেশের পক্ষে কথা বলেছিল। ভারতীয় আগ্রাসন, তৎকালীন সরকারের সঙ্গে করা কিছু গোপন চুক্তি এবং ফেনী নদীর পানি ও ইলিশ রপ্তানি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল। এ কারণে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার তখন একতরফা নীতি নিয়ে বৈষম্য তৈরি করেছিল। আবরার লিখেছিল ভারত গোপনে ফেনীর পানি নিচ্ছে, আমরা ইলিশ পাচ্ছি না, অথচ আমাদের ইলিশ কম দামে ভারতে রপ্তানি করা হচ্ছে। শুধু এসব লিখে প্রকাশ্যে কথা বলার অপরাধেই তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
আবরারের বাবা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, ‘আজ ছয় বছর পার হয়েছে, কিন্তু এখনো আমার ছেলের হত্যার পূর্ণ বিচার পাইনি। আমি ন্যায়বিচার চাই—এটাই একজন অসহায় বাবার দাবি।’
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র্যাগিংয়ের ভয়াবহতা তুলে ধরে বরকত উল্লাহ বলেন, আজও দেশের বিভিন্ন হলে র্যাগিং চলছে। এখন তো ড. ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে, তাহলে এই অবস্থা কেন থাকবে?
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘জুলাই-আগস্টে যেসব তরুণ শহিদ হয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের একটি তালিকা করেছে, এটি প্রশংসনীয়। কিন্তু ছাত্রলীগের হাতে র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের কোনো তালিকা নেই। আমি অনুরোধ করব, এ ধরনের মৃত্যুরও একটি রাষ্ট্রীয় তালিকা প্রস্তুত করা হোক।’
বরকত উল্লাহ দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ ও বেদনা নিয়ে বলেন, ‘আমার ছেলে দেশের কথা বলেছিল, সেটাই তার একমাত্র অপরাধ। আমি বারবার বিচার দাবি করেছি, কিন্তু এখনো সে প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ। আমি দেশের বিবেকবান মানুষের কাছে আবেদন জানাই, আবরারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুন।’