রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ৪৩ হাজার পৃষ্ঠার ডকুমেন্টসহ আবেদন করেছিল জুলাই বিপ্লবের পর গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবুও প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি দলটি। তবে এনসিপির নিবন্ধন না পাওয়ার বিষয়ে ‘হাসিনার কালো আইন’কে দায়ী করেছেন দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির।
নিবন্ধন প্রসঙ্গে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন এনসিপির এই নেতা।
জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আইনের যেকোনো কারণেই তারা বাদ দেখাতে পারে। ১৫ আগস্ট শেখ হাসিনা তার পছন্দের ভুঁইফোড় সংগঠন ছাড়া কোনো দলের নিবন্ধন দেয়নি। গণঅধিকার পরিষদকে দেয়নি, মান্না ভাইয়ের দলকে দেয়নি। অথচ সব দলই তার ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল করছিল।’
তিনি বলেন, ‘এই ফ্যাসিস্ট (শেখ হাসিনা) পতনের এক সপ্তাহ বা এক মাসের মধ্যে কয়েকটি দল নিবন্ধন পায়। সুতরাং আমরা মনে করি, এখনো তারা ফ্যাসিস্ট আইনকে ব্যবহার করছে, আমাদের মতো একটি উদীয়মান সংগঠনকে রোধ করার জন্য।’
‘তবে আমরা নিশ্চিত, ইসি যদি শেখ হাসিনা থেকে শিক্ষা না নেয়, তাহলে তাকেও পালাতে হবে। ইসি লন্ডন পালাবে, না দিল্লি পালাবে তার ব্যাপার। কিন্তু তার এই ধরনের কার্যকলাপে মনে হচ্ছে তার পালানোর সময় এসেছে।’
যে কালো আইনের কথা বলা হচ্ছে সেটা আসলে কী, এমন প্রশ্নের জবাবে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব বলেন, ‘কালো আইন বলতে একটা হচ্ছে নিবন্ধন প্রথা। আগে বাংলাদেশের কোনো দলেরই নিবন্ধনের রেজিস্ট্রেশন করা লাগত না। জামায়াত ইসলামী ও বিএনপির সময় কোনো নিবন্ধন প্রথা ছিল না। ২০০৮ সালে এই নিবন্ধন প্রথা করা হয়। আরেকটা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা, যেটা সবশেষ শেখ হাসিনা করেছে। এই দুটোই হচ্ছে কালো আইন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা সেই আইনগুলো করেছেই সবাইকে আটকানোর জন্য।’
‘ভারতীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মিলে একটি চক্র হয়েছে। নির্বাচন কমিশনও (ইসি) এই চক্রের অংশ’ বলেও জানান জয়নাল আবেদীন শিশির।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব পদে আখতার হোসেনকে রেখে দলের কমিটির শীর্ষ পদে আছেন ১১ জন।
এনসিপির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে তরুণ ছাত্রনেতা নাহিদ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদও ছেড়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা নাহিদ ইসলাম ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।
আপনার মতামত লিখুন :