আগামী এক মাসের মধ্যে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, শুধু শেখ হাসিনা নয়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ও আমরা কার্যকর চাই। এছাড়া যেসব আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব ফ্যাসিস্ট, তাদের দোসর এবং যেসব সরকারি কর্মকর্তারা অভিযুক্ত রয়েছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদেরও বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এই যে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা অব্যাহত রাখতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পরবর্তী মামলাগুলোর রায় দিতে হবে এবং তা কার্যকর করতে হবে। যারা জেলে আছেন, আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের রায় কার্যকর হোক।
তিনি বলেন, যেদিন আমাদের ভাই আবু সাঈদ শহীদ হয়েছিলেন, সেদিন আমরা শপথ নিয়েছিলাম, এই হত্যার বিচার আদায় করেই ছাড়ব। জুলাই বিপ্লবে যে হাজারো শহীদ এবং কয়েক হাজার আহতের ওপর যে জুলুম করা হয়েছিলো, সেই জুলুমের রায় আমরা আজকে পেয়েছি। বিগত ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এদেশের সাধারণ মানুষের ওপর যে জুলুম-নির্যাতন করেছিলো, গুম-খুন ও মানবাধিকারহরণসহ পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা ও জুলাইয়ের গণহত্যা করেছিলো, এসব কিছুর বিচারের রায় আমরা পেয়েছি। আমরা এই রায়কে স্বাগত জানাই। এদেশের বিচারিক ইতিহাসে এই রায় একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা কেবল এই রায় পেয়েই সন্তুষ্ট নই। আমরা সেদিনই সন্তুষ্ট হবো, যেদিন এই রায় কার্যকর করা হবে। আমরা যেদিন আমাদের জীবদ্দশায় শুনতে পাবো যে, শেখ হাসিনাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকর করা হয়েছে, সেদিনই আমরা শান্তি পাবো। সেদিনই জুলাই বিল্পবের শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে, শহীদ পরিবার ও আহতরা শান্তি পাবে। এ সময় তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে রায় কার্যকর করার দাবি জানান।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, বরং জুলাই-আগস্টের ভিক্টিম হিসেবে বিচারের রায় ও তা কার্যকর দেখতে চাই। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আজকের রায়ে ব্যক্তি হিসেবে শেখ হাসিনাকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে এই রায়ের মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, শেখ হাসিনা শুধু ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং দল ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এই গণহত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী ছিলেন। ফলে আওয়ামী লীগও দল হিসেবে এই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত। এ সময় তিনি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার শুরু করার দাবি জানান।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, রাজস্বাক্ষী হলেও এই গণহত্যার পেছনে সাবেক আইজিপির হাত রয়েছে। তাই তার পাঁচ বছরের সাজায় আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা মনে করি, রাজস্বাক্ষী হলেও ওনার সাজা আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল।


