বরিশালের মুলাদীতে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক সন্দেহে স্বামীর মারধরে তাপস মন্ডল নামের একজন উদ্যোক্তার মৃত্যু হয়েছে। গত ২৩ অক্টোবর রাতে স্থানীয় চরকালেখান ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার উদ্যোক্তা তাপস পার্শ্ববর্তী নোমরহাট এলাকায় স্বপন মন্ডলের বাসায় যান। সেই সময় তাকে আটকে লোকজন নিয়ে হাত-পা বেঁধে রাতভর নির্যাতন করেন স্বপন মন্ডল। খবর পেয়ে রাতেই স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গুরুতর অবস্থায় তাপসকে উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন। এরপরে বরিশাল ও ঢাকায় দীর্ঘ ২১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে ১২ নভেম্বর রাতে তার মৃত্যু হয়।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) স্বামীকে হত্যার অভিযোগ এনে মুলাদী থানায় একটি মামলা করেছেন তাপসের স্ত্রী অনিকা মন্ডল।
সমসমায়িক সময়ে উপজেলার আলোচিত এই মামলাটিতে স্বপন মন্ডল ও তার স্ত্রী রাখি মন্ডলসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। মুলাদী পুলিশের একাধিক টিম অভিযুক্তদের ধরকে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, চরকালেখান ইউনিয়ন পরিষদে কম্পিউটার উদ্যোক্তা হিসেবে কাজের সময় স্থানীয় জিতেন মন্ডলের ছেলে স্বপন মন্ডলের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ওই সময় স্বপনের স্ত্রীর সাথে হৃদয়ঘটিত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তাপস, এনিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন স্বপন মন্ডল। গত ২৩ অক্টোবর রাতে তাপস মন্ডল নোমরহাট এলাকায় স্বপনের বাড়িতে গেলে তাকে আটকে ফেলা হয়। এবং লোকজন নিয়ে হাত-পা বেধে তাপসকে রাতভর ব্যাপক প্রহার করেন স্বপন। কোনো এক মাধ্যম এই খবর জানতে পেরে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম সরদার স্বজনদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে মুলাদী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে শারীরিক অবস্থান উন্নতি না হওয়ায় পরবর্তীতে তাপসকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১২ নভেম্বর রাতে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু কোলে ঢলে পড়েন।
তাপসের স্ত্রী অনিকা মন্ডল অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে স্বপন মন্ডল এবং তার লোকজন মারধর করে হত্যা করেছেন। তিনি এই ঘটনায় মুলাদী থানায় স্বপন এবং তার স্ত্রীসহ ৯জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। এবং অভিযুক্তদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশের কাছে জোর দাবি রাখেন।
মামলার বিষয়টি স্বীকার করে মুলাদী থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে জানান, ‘এই ঘটনায় জড়িত স্বপনসহ সকল অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। কিন্তু মামলার খবর পেয়ে তারা সকলে রোববার থেকে গাঢাকা দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে তাদের গ্রেপ্তারে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে, মন্তব্য করেন ওসি।’



