‘বাঁচার জন্য আকুতি’ তেহরানে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের

তেহরানে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা ওয়ালিদ ইসলাম বলেছেন, আশপাশে এখন আর কিছুই নেই। কেবল কূটনীতিকদের কয়েকটি বাড়ি টিকে আছে। আমার বাসাও গুঁড়িয়ে দিয়েছে। অনেকেই ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করছেন। এখানকার পরিস্থিতি ভালো না ভাই, আমাদের বাঁচান।

বিবিসি বাংলাকে কথাগুলো বলেছেন তিনি।

ইরানে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। একের পর এক বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে দেশটির রাজধানী তেহরান। এমন পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচাতে দলে দলে রাজধানী ছাড়ছেন ইরানের বাসিন্দারা। এতে গত কয়েকদিন ধরেই রাস্তায় তীব্র যানজট দেখা মিলেছে।

ইসরায়েলের দিকে এবার ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান

বিস্তারিত পড়ুন

অন্যদিকে, অসংখ্য মানুষ গাড়িতে করে শহর ছাড়তে যাওয়ায় পেট্রোল পাম্পগুলোতেও জ্বালানি তেলের সংকট তৈরি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অনেকে তেল পাচ্ছেন না।

এমন পরিস্থিতিতে তেহরান থেকে বের হওয়ার জন্য বাংলাদেশ মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা।

তেহরানে সোমবার ইসরায়েলের হামলায় সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তাদের বাসভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত একজন কর্মকর্তার বাড়িঘর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে হামলার সময় তিনি বাড়িতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে গেছেন।

ইসরায়েলের আকাশ ‘সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে’ নেওয়ার দাবি ইরানের

বিস্তারিত পড়ুন

তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা মূলত জর্ডান নামের একটি এলাকায় বসবাস করেন, যা পড়েছে তেহরানের তিন নম্বর জেলায়। ওই এলাকায় দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। সোমবার ঘোষণা দিয়ে সেখানেও হামলা করেছে ইসরায়েল। হামলার আগে বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়। এতে প্রাণহানি কিছুটা কম হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য স্থাপনা।

তিন নম্বর জেলায় ইসরায়েলি সেনারা হামলার ঘোষণা দেওয়ার পর সেখানকার বাংলাদেশ মিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বাংলাদেশি নাগরিকদের সবাইকে ওই এলাকা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ঢাকা।

এরপর তেহরানে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস কমপ্লেক্স ছেড়ে যান সেখানকার কর্মীরা। যদিও বর্তমানে তারা তেহরানের অন্য এলাকায় অবস্থান করছেন। তবে ইসরায়েলি হামলার ব্যাপ্তি ক্রমেই বাড়তে থাকায় এখন নাগরিকদের তেহরানের বাইরে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ফের ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৮৯ ফিলিস্তিনি

বিস্তারিত পড়ুন

তেহরানে বর্তমানে ৪০০-র মতো বাংলাদেশি অবস্থান করছেন, তারা সবাই অক্ষত রয়েছেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এ ছাড়া তেহরানের বাইরেও কিছু কিছু শহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ফলে সেসব জায়গা থেকে অনেকে যোগাযোগ করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য আকুতি জানাচ্ছেন কর্মকর্তাদের কাছে।

ওয়ালিদ ইসলাম বলেন, ‘যেমন, বন্দর আব্বাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেখানকার পরিস্থিতিও খারাপ। ফলে ওই এলাকা থেকেও অনেকে ফোন দিচ্ছেন, আর কান্নাকাটি করছেন। এই আর্তনাদ আসলে সহ্য করা যায় না’।

সরকারি হিসাবে, বর্তমানে দেশটিতে প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশি আছে।