ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫

অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাসাইলাম আবেদনকারীরা পাসপোর্ট পাচ্ছেন না

প্রবাস ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ০৪:০৯ এএম
ছবি- সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি অ্যাসাইলাম (রাজনৈতিক আশ্রয়) আবেদনকারীরা ই-পাসপোর্ট পাচ্ছেন না। বাংলাদেশ হাইকমিশন, ক্যানবেরা এবং সিডনি কনস্যুলেট—উভয় মিশনই এ ধরনের আবেদন গ্রহণ থেকে বিরত রয়েছে। 

এতে প্রবাসে থাকা শত শত বাংলাদেশি পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাগ্রহণ এবং অভিবাসন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ—সবকিছুতেই দেখা দিয়েছে জটিলতা।

সিডনির লাকেম্বায় বসবাসরত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। নিরাপত্তার কারণে আমি অ্যাসাইলামের আবেদন করেছি। এর মধ্যেই পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে। নতুন পাসপোর্টের জন্য কনস্যুলেটে গেলে তারা আবেদনই নেয়নি। এখন আমি যেন না অস্ট্রেলিয়ার, না বাংলাদেশের—দুই দিক থেকেই বিচ্ছিন্ন।’

বৈধ পাসপোর্ট না থাকায় অনেক বাংলাদেশি সরকারি চিকিৎসা সুবিধা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি কিংবা প্রফেশনাল কোর্সে আবেদন—সব ক্ষেত্রেই পাসপোর্ট জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সিডনিতে বসবাসরত এক পরিবার জানায়, মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টের কারণে সন্তানের চিকিৎসার কাগজপত্র বারবার জমা দিতে হচ্ছে, যা প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলেছে।

অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন আইনজীবী মোহাম্মদ নিজামউদ্দীন বলেন, ‘অ্যাসাইলাম আবেদন একটি বৈধ প্রক্রিয়া। সেই কারণ দেখিয়ে নিজ দেশের পাসপোর্ট না দেওয়াটা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের পরিপন্থী।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ অনেক সময় বলে, এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। অথচ একজন নাগরিককে পাসপোর্ট না দেওয়া মানেই নিজ দেশের নিপীড়নের প্রমাণ তুলে ধরা। এটাই বরং দেশের ভাবমূর্তিকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে।’

ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক বদরুল আলম খান বলেন, ‘পাসপোর্ট কেবল একটি কাগজ নয়, এটি একজন মানুষের পরিচয়ের শিকড়। সেটি কেড়ে নেওয়া মানে ব্যক্তিগত মর্যাদা হরণ। এটি প্রশাসনিক জটিলতা নয়, একটি মানবিক বিপর্যয়।’

সিডনির কনসাল জেনারেল মো. সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, ‘আমরা এই সমস্যা সম্পর্কে অবগত। তবে অ্যাসাইলাম আবেদনকারীদের পাসপোর্ট ইস্যু করার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো সরকারি নির্দেশনা নেই। ক্যানবেরা ও সিডনি উভয় মিশনই একই নীতিমালায় কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছ থেকে এ বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত আগের নীতিই বলবৎ থাকবে।’