একাকিত্ব শুধু মানসিক নয়, শারীরিক স্বাস্থ্যেরও গুরুতর ক্ষতি করে—এমনই চিত্র উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সার্জন জেনারেল’ ডা. ভিভেক মার্থির সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে।
৮১ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ও একাকিত্ব দৈনিক ১৫টি সিগারেট খাওয়ার মতো ক্ষতিকর। এর ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, বিষণ্নতা, স্মৃতিভ্রংশ এমনকি অকাল মৃত্যুর আশঙ্কাও বাড়ে।
একাকিত্বের ক্ষতি কেমন
একাকিত্বে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায় ২৬%। সামাজিক বিচ্ছিন্নতায় এই ঝুঁকি বাড়ে ২৯%। এটি কর্টিসল ও নোরাপিনাফ্রেন নামক মানসিক চাপের হরমোন বাড়ায়। শরীরে প্রদাহ তৈরি করে, যা হৃদরোগ ও স্মৃতিভ্রংশের কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা
ড. জুলিয়ান হল্ট-লান্সটেড বলেন, ‘আমাদের মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে যোগাযোগের জন্য তৈরি।’
নিউরোসায়েন্টিস্ট ম্যাথিউ লিবারম্যান বলেন, ‘একাকিত্ব আমাদের মস্তিষ্ককে ফাইট-অর-ফ্লাইট মুডে পাঠায়, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়।’
কীভাবে একাকিত্ব দূর করবেন
ডা. হল্ট-লান্সটেড একাকিত্ব কাটিয়ে ওঠার জন্য তিনটি উপায় বাতলে দিয়েছেন-
বর্তমান সম্পর্কগুলো লালন করুন
– নিয়মিত খোঁজ নেওয়া, বার্তা পাঠানো, কথা বলা—এগুলো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে সহায়ক।
আগ্রহভিত্তিক দলে যুক্ত হন
– ভিন্নমত ও পটভূমির মানুষের সঙ্গে যুক্ত হতে পারলে সামাজিক যোগাযোগের পরিধি বাড়ে।
অন্যদের সহায়তা করুন
– স্বেচ্ছাসেবী কাজ বা দয়ালু আচরণ মানসিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
মনে রাখবেন
সামাজিক যোগাযোগ ও সম্পর্ক রক্ষা শুধু মানসিক শান্তির জন্য নয়, দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক সুস্থতার জন্যও জরুরি। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা সামাজিকভাবে সক্রিয়, তাঁদের ৫০% বেশি দিন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে।