ইফতার আরবি শব্দ, যা রমজান মাসে রোজাদারদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। রোজা সমাপ্ত করার উদ্দেশে সূর্যাস্তের পর যেকোনো কিছু পানাহার করাকে ইফতার বলে। সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা উত্তম। তারচেয়ে অধিক উত্তম ইফতারের আগে দোয়া করা। কেননা, রোজা সমাপ্তির আগমুহূর্তে ইফতারি সামনে নিয়ে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়।
ইফতারসহ যে কোনো খাওয়া-দাওয়ার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বা ‘বিসমিল্লাহি ওয়া আলা বারাকাতিল্লাহ’ পড়া সুন্নত। তাই ইফতার শুরু করতে হবে বিসমিল্লিাহ পড়ে। খাওয়ার অন্যান্য সুন্নত ও আদব যেমন খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে নেওয়া, বিনীত ভঙ্গিতে বসা, হেলান দিয়ে অহংকারীর মতো না বসা, ডান হাতে খাওয়া, ধীরে-সুস্থে খাওয়া, খাওয়া শেষে আল্লাহর শোকর আদায় করা, কেউ খাওয়ালে তার জন্য দোয়া করা ইত্যাদিও ইফতারের সময় মনে রাখা উচিত।
এ ছাড়া ইফতারের কিছু বিশেষ দোয়া রয়েছে যেগুলো নবিজি (সা.) বা তার সাহাবিরা ইফতারের সময় পড়তেন। এখানে ৩টি দোয়া উল্লেখ করছি:-
১. সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) ইফতারের সময় দোয়া করতেন
اَللهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِيْ وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ أَنْ تَغْفِرَ لِيْ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিরাহমাতিকাল-লাতী ওয়াসি’তা কুল্লা শাইইন আন তাগফিরা লী
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার সেই রহমতের উসিলায় প্রার্থনা করছি সব কিছুর উপর পরিব্যপ্ত, আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। (সুনানে ইবনে মাজা: ১৭৫৩)
২. ইফতারের পর নবিজি (সা.) এই দোয়া পড়তেন,
ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ
উচ্চারণ: যাহাবায-যামাউ ওয়া-বতাল্লাতিল উরুকু ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশাআল্লাহ
অর্থ: পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপশিরা সতেজ হলো আর আল্লাহ তাআলা চান তো রোজার সওয়াব লিপিবদ্ধ হলো। (সুনানে আবু দাউদ: ২৩৫৭)
৩. ইফতারের পর নবিজি (সা.) এই দোয়াটিও পড়তেন,
اَللهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلىٰ رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া ’আলা রিযকিকা আফতারতু
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার উদ্দেশ্যেই রোজা রেখেছি এবং আপনার দেয়া রিজিক দিয়েই ইফতার করেছি। (সুনানে আবু দাউদ: ২৩৫৮)
ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়:-
ইফতারের আগে দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না; এ ব্যাপারে সহীহ হাদিস রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া অগ্রাহ্য করা হয় না (বরং কবুল করা হয়); পিতার দোয়া, রোজাদারের দোয়া এবং মুসাফিরের দোয়া।’ (বাইহাকী ৩/৩৪৫, প্রমুখ, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৭৯৭নং)
সুতরাং রোজাদারের জন্য ইফতারের আগমুহূর্ত পর্যন্ত যে কোনো সময় দোয়া কবুল হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সময়। বিশেষ করে ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে মানুষ ক্ষুধা-পিপাসায় কাতর ও ক্লান্ত-শ্রান্ত থাকে। তাই সে সময় দোয়া কবুলের সম্ভাবনা আরও বেশি। কারণ এ ধরনের দুর্বল ও কষ্টকর অবস্থায় দোয়া করা হলে তা কবুলের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
এ বিষয়ে একটি হাদিস রয়েছে- ‘ইফতারের সময় রোজাদারের জন্য এমন একটি দোয়া রয়েছে যা ফিরিয়ে দেয়া হয় না।’ (ইবনে মাজাহ, হাকিম)

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন