রোজার আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অন্যতম মাধ্যম। প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিটি মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর রমজান মাসের রোজা রাখা ফরজ। এর বাইরে পুরো বছর, সপ্তাহ, মাস ও বিভিন্ন মাসে নফল রোজা রাখার ফজিলত আছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সপ্তাহের ২ দিন, সোমবার ও বৃহস্পতিবারে রোজা রাখতেন।
আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি কি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখেন?
উত্তরে তিনি বলেন, নিশ্চয় এ দুটি দিনে আল্লাহ পরস্পর বিচ্ছিন্নতা অবলম্বনকারী দুই ব্যক্তি ছাড়া সব মুসলিমকে ক্ষমা করে দেন। (ফেরেশতাদের তিনি বলেন) তারা আপস-মীমাংসা করা পর্যন্ত তাদের ত্যাগ করো। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৭৪০)
সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার ফজিলতগুলো হলো-
(১) আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। হাদিসে কুদসিতে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘রোজা আমার এবং আমিই এর প্রতিদান দেব’।
(২) রাসূল (সা.) এর অনুসরণ। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) সোমবার এবং বৃহস্পতিবারের রোজার অপেক্ষা করতেন’। (ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, নাসাঈ)
(৩) আল্লাহ তাআলা বান্দা থেকে জাহান্নামকে ১০০ বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তাআলা জাহান্নামকে তার থেকে ১০০ বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন’। (আস সিলসিলাতুস সহিহাহ: খন্ড-৬, হাদিস নম্বর: ২৫৬৫)।
(৪) আল্লাহ তাআলা বান্দা এবং জাহান্নামের মাঝে আসমান ও জমিনের দূরত্ব সমান খন্দক তৈরি করে রাখেন। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তাআলা তার এবং জাহান্নামের মাঝে আসমান ও জমিনের দূরত্ব সমপরিমাণ খন্দক তৈরি করে দেবেন’। (আস সিলসিলাতুস সহিহাহ: খণ্ড-২, হাদিস নম্বর: ৫৬৩)
(৫) রোজা কেয়ামতের দিন বান্দার মুক্তির জন্য সুপারিশ করবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রোজা এবং কোরআন কেয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা আল্লাহ তাআলাকে বলবে, হে আমার রব! আমি তাকে আহার এবং স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত রেখেছিলাম সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল কর।
কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতে ঘুম থেকে জাগিয়ে রেখেছিলাম, এজন্য তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল কর। রাসূল (সা.) বলেন, তখন উভয়ের সুপারিশ কবুল করা হবে’। (আহমদ: খণ্ড-২, হাদিস নম্বর: ১৭৪)
(৬) কেয়ামতের দিন বাবুর রাইয়ান দিয়ে প্রবেশের সুযোগ লাভ করবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয় জান্নাতের রাইয়ান নামের একটি দরজা আছে, কেয়ামতের দিন সেখান দিয়ে রোজাদাররা প্রবেশ করবে’। (বুখারি: হাদিস নম্বর: ১৮৯৬, মুসলিম: হাদদি নম্বর: ১১৫২)
(৭) রোজা অবস্থায় ইন্তেকাল করার সম্ভাবনা এবং জান্নাত লাভ। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে রোজা অবস্থায় ইন্তেকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’। (সহিহ আল জামে: হাদিস নম্বর: ৬২২৪)
রোজার আরবি নিয়ত
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
ইফতারের দোয়া
بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ
বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
আপনার মতামত লিখুন :