শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ০১:১৫ পিএম

অজু ভাঙার কারণ

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ০১:১৫ পিএম

অজু ভাঙার কারণ

নামাজের জন্য অজু করছেন মুসুল্লি। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আল্লাহ তাআলা মুমিনের জন্য প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়াকে ফরজ করেছেন। নামাজের পূর্বশর্ত অজু করা। অজু ছাড়া নামাজ পড়লে সেই নামাজ হবে না। আর সুন্দরভাবে অজু করার গুরুত্ব, সওয়াব ও ফজিলত অনেক বেশি।

তাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার আগে অবশ্যই অজু করার চেষ্টা করবেন। অনেকেই একবার অজু করে এক বা দুই ওয়াক্তের নামাজ পড়েন। এ সময়ে বিভিন্ন কাজ করতে হয়। অনেক সময় এসব কাজের মধ্যে কখন অজু ভেঙে গেছে, সেটা বোঝা যায় না। ভাঙার কারণ কয়টি ও কী কী তা জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

মৌলিকভাবে অজু ভাঙার কারণ সাতটি-

১. পায়খানা ও প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন- বায়ু, প্রস্রাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি (হেদায়া, হাদিস : ১/৭)।

এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাজের জন্য উঠো, তখন স্বীয় মুখমণ্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত করো এবং পদযুগল গিটসহ।

যদি তোমরা অপবিত্র হও, তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও এবং যদি তোমরা রুগ্‌ণ হও, অথবা প্রবাসে থাকো অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করো, অতঃপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও, অর্থাৎ স্বীয় মুখমণ্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেল।

আল্লাহ তোমাদের অসুবিধায় ফেলতে চান না, কিন্তু তোমাদের পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ০৬ )

২. রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া (হেদায়া : ১/১০)। এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে যে, আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.)-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ত, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। (মুয়াত্তা মালিক, হাদিস : ১১০)

৩. মুখ ভরে বমি করা। এ বিষয়ে আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তির বমি হয় অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে বা মজি (সহবাসের আগে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নেবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১২২১)

৪. থুতুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া। এ বিষয়ে হাসান বসরি (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি তার থুতুতে রক্ত দেখে, তাহলে থুতুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১৩৩০)

৫. চিত বা কাত হয়ে ঘুমানো। এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিত হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙে যাবে, কেননা চিত বা কাত হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়।’

(মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩১৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২০২)

৬. পাগল, মাতাল বা অচেতন হলে। এ বিষয়ে হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যখন পাগল ব্যক্তি সুস্থ হয়, তখন নামাজের জন্য তার অজু করতে হবে। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৯৩)

৭. নামাজে উচ্চ স্বরে হাসলে। এ বিষয়ে ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজে উচ্চ স্বরে হাসে, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। এ ছাড়া হাসান বিন কুতাইবা (রহ.) বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি উচ্চ স্বরে হাসি দেয়, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে।’ (সুনানে দারা কুতনি, হাদিস : ৬১২)

অজু তিন প্রকার-

ফরজ, ওয়াজিব এবং মুস্তাহাব। নামাজের জন্য অজু ফরজ। কাবা শরিফ তওয়াফের জন্য অজু করা ওয়াজিব। গোসল ও ঘুমানোর আগে অজু করা মুস্তাহাব।

অজু করার নিয়ম-

বিসমিল্লাহর সঙ্গে প্রথমে নিয়ত করতে হয়। তারপর ডান হাতের ওপর তিনবার ও বাঁ হাতের ওপর তিনবার পানি ঢেলে ধুতে হবে। আঙুলের ফাঁকে এমনকি আংটির মাঝেও পানি প্রবেশ করাতে হবে। হাতের তালুতে পানি নিয়ে তিনবার গড়গড়ার সঙ্গে কুলি করতে হবে। তারপর ডান হাতে পানি দিয়ে নাকের ছিদ্রে পানি প্রবেশ করিয়ে বাঁ হাতের আঙুল দিয়ে চেপে তিনবার নাক পরিষ্কার করে নিতে হবে। অতঃপর পুনরায় দুই হাতে পানি ছিটিয়ে তিনবার মুখমণ্ডল ধুয়ে ফেলতে হবে।

পরে বাঁ হাতে পানি নিয়ে ডান বাহু কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুতে হবে এবং একইভাবে ডান হাতে পানি নিয়ে বাঁ বাহু কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুতে হবে। এরপর ভেজা হাত মাথার ওপরে নিয়ে সামনে থেকে পেছনে এবং পেছন থেকে সামনে মাসেহ বা মোছার কাজ করতে হবে।

এ সময় মনে মনে কলেমা শাহাদাত পড়া যেতে পারে। অতঃপর দুই কানে তর্জনী প্রবেশ করিয়ে এবং কানের পেছনে বৃদ্ধাঙ্গুলি নিয়ে ও তা আগে পিছে করিয়ে কানের ছিদ্র ও বাইরের অংশ মুছে পরিষ্কার করতে হবে। শেষে বাঁ হাতের তালু দিয়ে ডান পায়ের ওপর, নিচ ও আঙুলের ফাঁক ধুতে হবে এবং একইভাবে ডান হাতের তালু দিয়ে বাঁ পায়ের ওপর, নিচ ও আঙুলের ফাঁক ধুতে হবে।

কোথাও অজুর পানি না পাওয়া গেলে বা অসুস্থতার কারণে কেউ পানি ব্যবহারে অসমর্থ হলে সে ক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে শুকনো মাটি বা বালি ব্যবহার করে পরিচ্ছন্ন হওয়ার বিধান শরিয়তে দেওয়া হয়েছে।

Link copied!