মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম

মোহরানার পরিমাণ ও পরিশোধের নিয়ম

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম

মোহরানার পরিমাণ ও পরিশোধের নিয়ম

প্রতীকী ছবি

বিয়ের সময় স্ত্রীকে মোহরানা প্রদান করা স্বামীর ওপর ফরজ। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর তোমাদের স্ত্রীদের মোহরানা আদায় করো খুশি মনে। অবশ্য স্ত্রী চাইলে মোহরানার কিছু অংশ কিংবা পূর্ণ অংশ ছেড়ে দিতে পারে। (এটি একান্তই তার ব্যাপার)।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৪)

পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী! আমি আপনার জন্য বৈধ করেছি স্ত্রীদের, যাদের মোহরানা আপনি আদায় করেছেন।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫০)

মোহরানার পরিমাণ

ইসলামি শরিয়তে মোহরানার সর্বোচ্চ কোনো পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়নি। সর্বনিম্ন পরিমাণ হলো ১০ দিরহাম। অর্থাৎ ৩০.৬১৮ গ্রাম বা ২.৬২৫ তোলা রুপা অথবা এর সমপরিমাণ মূল্য। (কাশফুল মাকাদির: ৩৬) ২২ ক্যারেট রুপার বর্তমান মূল্য হিসাবে (বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সূত্র মতে ২২ ক্যারেট রুপার প্রতি গ্রামের মূল্য ১৪৭ টাকা) বাংলা টাকায় এর অর্থ মূল্য দাঁড়ায় (২.৬২৫×১৪৭) ৪ হাজার ৫০০ টাকা মাত্র।

এর চেয়ে কম মোহরানা নির্ধারণ করলে এবং স্ত্রী তাতে রাজি থাকলেও হানাফি মাজহাব মতে ওই স্ত্রী মোহরে মিছিলের (ফুফুদের বিয়েতে ধার্যকৃত সমপরিমাণ মোহরানা) হকদার হবে।

হাদিসে এসেছে, ‘১০ দিরহামের কমে মোহরানা হয় না।’ (বায়হাকি: ৭/২৪০) কিন্তু এর বেশি যেকোনো পরিমাণই মোহরানা নির্ধারণ করা যায়।

মোহরানা নির্ধারণে করণীয়

স্বামীর সামর্থ্য বিবেচনা করে মোহরানা নির্ধারণ করা উচিত। এমন কোনো সিদ্ধান্ত স্বামীর ওপর চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়, যা সে আদায় করতে পারবেন না। সাধারণত মোহরানা কম ধার্য করাই মুস্তাহাব।

মোটা অঙ্কের মোহরানা নির্ধারণ করা এখন সামাজিক সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মোটা অঙ্কের মোহরানা ধার্য করার উদ্দেশ্যের মধ্যেই পরিশোধের বিষয়টি থাকে না। এটা বরের প্রতি একটা সংকেত যে, দাম্পত্য সম্পর্ক কখনো শেষ করতে চাইলে এই বিশাল অঙ্ক পরিশোধ করতে হবে।

মোহরানা আদায় প্রসঙ্গ

বিয়ের সঙ্গে সঙ্গে মোহরানা আদায় করা উচিত। অনিবার্য কারণে ওই সময় আদায় করা সম্ভব না হলে কখন আদায় করা হবে, তার মেয়াদ নির্ধারিত করে নিতে হবে। কিন্তু এভাবে পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ না করে শুধু মৌখিকভাবে বা কাগজে-কলমে মোহরানা নির্ধারণ করে সারা জীবন আদায় না করা বা স্ত্রীর কাছ থেকে মাফ করিয়ে নেওয়া কিংবা আদায় না করে স্ত্রীর দেনা কাঁধে নিয়ে মৃত্যুবরণ করা শুধু যে ইসলামের দৃষ্টিতে কঠিন অন্যায় তা-ই নয়; নিতান্ত হীন কাজও বটে।

মোহরে ফাতেমি

বিয়ে-শাদির ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মেয়ে এবং পবিত্র স্ত্রীরা উম্মতের আদর্শ। মোহরানার ক্ষেত্রে আমাদের সমাজে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত মোহরানা হলো মোহরে ফাতেমি, যা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কন্যা ফাতেমা (রা.)-এর বিয়েতে নির্ধারণ করা হয়েছিল। (দাওয়াতুন নজর ফি তাকদিরিল মোহর: ৩) হাদিসে এসেছে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কন্যাদের মোহরানা ছিল সাড়ে ১২ উকিয়া বা ৫০০ দিরহাম। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, ১৬৬৩০)

ফাতেমা (রা.)-এর বিয়েতে মোহরানা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫০০ দিরহাম, যা গ্রাম হিসাবে ১৫৩০.৯ এবং তোলা হিসাবে ১৩১.২৫ তোলা খাঁটি রুপা। (জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া: ৪/৩৫০) ২২ ক্যারেট রুপার বর্তমান মূল্য হিসাবে (বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সূত্র মতে ২২ ক্যারেট রুপার প্রতি গ্রামের মূল্য ১৪৭ টাকা) বাংলা টাকায় এর অর্থ মূল্য দাঁড়ায় (১৫৩০.৯×১৪৭) ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা মাত্র।

মোহরানার বিবিধ মাসায়েল

স্বামীর সাধ্য অনুযায়ী মোহরানা ধার্য করা সুন্নত। চাই পরিমাণে কমবেশি হোক। তবে মোহরে ফাতেমি ধার্য করা বরকতময় এবং উত্তম। (ইজাহুল মেশকাত: ৩/১১৪; আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ৫/১৫৩) মোহরানার সর্বনিম্ন পরিমাণ হলো ১০ দিরহাম। বর্তমান হিসেবে পৌনে তিন (২.৬২৫) তোলা। এর চেয়ে কম মোহরানা নির্ধারণ করলে অথবা চুক্তির সময় কোনো পরিমাণ নির্ধারণ না করলে মোহরে মিছিল ওয়াজিব হয়। (বায়হাকি: ৭/২৪০; ফাতাওয়ায়ে হাক্কানিয়া: ৪/৩৫৬)

মোহরানা টাকা দিয়েই আদায় করা উচিত। বিয়ের সময় দেওয়া অলংকার, কাপড়চোপড় ইত্যাদি যদি মোহরানা হিসেবে গণ্য হওয়ার বিষয়টি স্ত্রীর সম্মতিতে হয়, তাহলে মোহরানা হিসেবে গণ্য হবে, অন্যথায় নয়। (সুরা নিসা, আয়াত: ২৪; কিফায়াতুল মুফতি: ৫/১২৩)

মোহরানা আদায়ে টালবাহানা করা কিংবা একেবারে আদায় না করার নিয়ত থাকলে শরিয়তের দৃষ্টিতে ব্যক্তি গুনাহগার হবে। (ফাতাওয়া কাসেমিয়া ১৩/৭৫৭)

চাপ প্রয়োগ করে অথবা কৌশলে মোহরানা ক্ষমা করিয়ে নিলে মোহরানা মাফ হয় না। অবশ্য স্ত্রী যদি খুশি হয়ে মোহরানা মাফ করে দেয়, তাহলে স্বামী দায়িত্বমুক্ত হবে। অন্যথায় চুক্তিকৃত পূর্ণ মোহরানা আদায় করা স্বামীর জিম্মায় আবশ্যক। (কিতাবুন নাওয়াজিল: ৮/৪২৮-৪২৯; ফাতাওয়া কাসেমিয়া: ১৩/৭৬০)

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!