কোরবানি শুধুমাত্র একটি ইবাদত নয়, এটি সামাজিক দায়িত্ববোধ, সহানুভূতি ও সাম্যের বহিঃপ্রকাশ। কোরবানির মাংস বণ্টনের মাধ্যমে একজন মুসলমান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পাশাপাশি সমাজের গবির ও দরিদ্র আত্মীয়-স্বজনের পাশে দাঁড়ান।
ইসলামি শরিয়তের আলোকে কোরবানির মাংসকে তিনভাগে ভাগ করা সুন্নত-
একভাগ নিজের জন্য,
একভাগ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের জন্য,
একভাগ গবির ও অসহায়দের জন্য।
এই ভাগাভাগি কোরবানির মূল উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করে- আল্লাহর সন্তুষ্টি, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা এবং দারিদ্র্য বিমোচন।
গরিব আত্মীয়কে দেওয়ার নির্দিষ্ট পরিমাণ
কোরবানির মাংস থেকে গবির আত্মীয়দের কতটুকু দিতে হবে, শরিয়তে তার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ নির্ধারিত নয়। তবে যেহেতু দরিদ্র আত্মীয়দের হক রয়েছে, তাই তাদেরকে যথাযথ ও পর্যাপ্ত অংশ দেওয়া উত্তম। যদি কেউ ইচ্ছা করে নিজের অংশ থেকেও তাদের বেশি দেয়, তবে তা সওয়াবের দিক থেকে আরও উত্তম ও বরকতময় হবে।
গরিব আত্মীয়কে দান দ্বিগুণ সওয়াব
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সদকা যদি আত্মীয়কে দেওয়া হয়, তাহলে তা সদকা এবং আত্মীয়তার হক দুইটাই পূরণ হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস: 658)
অতএব, গরিব আত্মীয়দের কোরবানির মাংস দেওয়া শুধু দান নয়, বরং আত্মীয়তার সম্পর্কও রক্ষা করা হয়।
বণ্টনের সময় ন্যায়বিচার
মাংস বণ্টনের সময় দেখা উচিত কে কতটা অভাবী, কার ঘরে কতজন খেতে পারে- সে বিবেচনায় ন্যায়বিচার করে মাংস দেওয়া উচিত। কিছু আত্মীয় সামান্য দরিদ্র, আবার কেউ হয়তো খুবই কষ্টে আছে- তাহলে প্রয়োজন অনুযায়ী বেশি মাংস দেওয়া কোনো সমস্যা নয়, বরং তা প্রশংসনীয়।
কোরবানির মাংস গরিব আত্মীয়দের মাঝে বণ্টনের ক্ষেত্রে শরিয়তে কোনো নির্দিষ্ট ও বাধ্যতামূলক পরিমাণ নেই। তবে সুন্নতের আলোকে কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ মাংস দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ রেখে, তাদের প্রয়োজন অনুসারে ভাগ করে দেওয়া উত্তম। এতে করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়, আত্মীয়তার বন্ধন মজবুত হয় এবং সমাজে সাম্য ও সহানুভূতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়।