রাগ মানুষের স্বাভাবিক এক আবেগ, তবে তা যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে এটি জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। আগুণ যেমন সবকিছু পুড়িয়ে ফেলে তেমনি রাগ মানুষের মনুষত্ব ধ্বংস করে দেয়। রাগের কারণেই পরিবার ও সমাজে অধিকাংশ সময় অশান্তির আগুন জ্বলে উঠে। সংসার ভেঙে যায়। এ ছাড়া মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের অবনতিও ঘটে। তাই অহেতুক রাগ পরিহার করা উচিৎ।
ইসলাম রাগ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছে। কোরআন ও হাদিসে রাগ প্রশমনের জন্য বিভিন্ন উপায় বলা হয়েছে, যা একজন মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও চরিত্র গঠনে সহায়ক হতে পারে।
রাগ নিয়ন্ত্রণে হাদিসে নির্দেশনা হচ্ছে- যদি রাগ উঠে, তাহলে দাঁড়ানো থাকলে বসে পড়বে। ইনশাআল্লাহ রাগের মাত্রা কমে আসবে। যদি বসে পড়ার পরও রাগ না যায়, তাহলে শুয়ে পড়বে। এবার আর রাগ থাকার কথা নয়। যদি শুয়ে পড়ার পরও রাগ না কমে, তাহলে অজু বা গোসল করে ফেলবে। ইনশাআল্লাহ এতে রাগ থাকবে না।
রাগের সময় হাদিসে বর্ণিত এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে। ‘অহেতুক রাগ করা শয়তানের কাজ’ এ বিষয়টিও মাথায় রাখুন। ইনশাআল্লাহ রাগের বদভ্যাস ধীরে ধীরে কমে আসবে।
হজরত আবু জর গিফারী (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যদি তোমাদের কেউ দাঁড়ানো অবস্থায় রাগাম্বিত হও, তাহলে বসে পড়ো। যদি এতে রাগ চলে যায়, তাহলে তো ভাল, নতুবা শুয়ে পড়। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২১৩৪৮)
আবু ওয়াইল আল-কাস (রহ.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা উরওয়াহ ইবনু মুহাম্মাদ আস সাদির কাছে গেলাম। তখন এক ব্যক্তি তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি করে তাকে রাগিয়ে দিলো। তখন তিনি দাঁড়ালেন এবং অজু করলেন।
এরপর বললেন, আমার পিতা আমার দাদা আতিয়্যাহ (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রাগ হচ্ছে শয়তানী প্রভাবের ফল। শয়তানকে আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর আগুন পানি দিয়ে নিভানো যায়। অতএব তোমাদের কারো রাগ হলে সে যেন অজু করে নেয়। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৮৪)
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন