সরকারের অভ্যন্তরে একটি সমান্তরাল ‘ছায়া সরকার’ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান।
তার ভাষ্য, ছায়া সরকারের নেতৃত্বে আছেন ছয় জন কৌশলী ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। যাদের একজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মো. এজাজ।
শুক্রবার (১৬ মে) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব তথ্য জানান জুলকারনাইন।
তিনি পোস্টে লেখেন, ‘আপনারা যাদের উপদেষ্টা বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে চেনেন, তারা এই ছায়া কাঠামোর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। বরং এসব মুখরোচক গল্প ছড়িয়ে আসল ষড়যন্ত্রকারীদের আড়াল করাই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য। যাতে ১৪ সদস্যের ‘ছোটন গ্যাং’ নিজেদের লক্ষ্য গোপনে বাস্তবায়ন করতে পারে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আজ উন্মোচন করা হবে এই গ্যাংয়ের অন্যতম সদস্য ও সরকারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা একজন বিতর্কিত কর্মকর্তা মো. এজাজের পরিচয়।’
জুলকারনাইনের দাবি অনুযায়ী, ‘মো. এজাজ নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রপন্থি সংগঠন হিযবুত তাহরিরের অন্যতম শীর্ষ নেতা ছিলেন। ছাত্রজীবনে তিনি ইসলামী ছাত্র শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং ২০০২ সাল থেকে হিযবুত তাহরিরের হয়ে কাজ শুরু করেন।’
তিনি জানান, এজাজ অন্তত দুইবার গ্রেপ্তার হন। ২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সিটি স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসএসবি) একটি স্মারকে দেখা যায়, হিযবুত তাহরির বাংলাদেশ শাখার শীর্ষ নেতাদের তালিকায় মো. এজাজ ছিলেন পঞ্চম।
‘একই বছর সংগঠনের প্রচারণা ও অর্থায়নের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(১)(ক)(৩)/২৫/ঘ ধারায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি আবারও সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয় হন।’
‘২০২৪ সালের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে একই বছরের ১০ নভেম্বর মো. এজাজ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষিত হয়। তারা সবাই খালাস পান,’ লেখেন এই সাংবাদিক।
এরপর থেকেই মো. এজাজ নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরিরকে বৈধতা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে দেন-দরবার শুরু করেন বলেও জুলকারনাইন জানিয়েছেন।
তার দাবি, ‘ছোটন গ্যাং’-এর সদস্যদের সঙ্গে আগেই পরিচয় থাকায় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সরাসরি সুপারিশে মো. এজাজকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। এ পদে তার নিয়োগে একজন নারী উপদেষ্টার সক্রিয় ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
জুলকারনাইন সায়ের বলেন, ‘একাধিক নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া গেছে, মো. এজাজকে ডিএনসিসির প্রশাসক হিসেবে নিয়োগের আগে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি। যা একটি গুরুতর প্রশাসনিক ব্যত্যয়।’
আপনার মতামত লিখুন :