এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচে সব আলো যেন গিয়ে পড়েছে এক ভিন্ন দৃশ্যে। জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। দেশবরেণ্য ক্রিকেটার হিসেবে সারা বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা পাওয়া এই তারকার মাঠে উপস্থিতি যেন হয়ে উঠেছে সমর্থকদের জন্য বাড়তি চমক।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় যখন ম্যাচ শুরুর অপেক্ষায় জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি গর্জে উঠছিল, ঠিক তখনই চোখে পড়ে তামিমকে। তিনি ছাড়াও মাঠে খেলা দেখতে উপস্থিত হয়েছেন সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও জাতীয় দলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ও দেশসেরা উইকেট-কীপার কাজী নুরুল হাসান সোহান।
বাংলাদেশের ফুটবল খেলার প্রতি তামিমের আগ্রহ নতুন কিছু নয়। আগেও তাকে গ্যালারিতে দেখা গেছে। অতীতে দর্শকদেরও ফুটবল দেখতে মাঠে আসার আহব্বান জানিয়েছেন বহুবার। আজকের ম্যাচে হাজারও উৎসুক জনতার সরব উপস্থিতি যেন তার সেই আহব্বানকেই স্বার্থকতা দিল।
সন্ধ্যার খেলা ঘিরে দুপুর থেকেই গুলিস্তান থেকে স্টেডিয়ামের চারপাশে শুরু হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। জাতীয় পতাকা, হামজা-জামালদের জার্সি আর রঙিন প্ল্যাকার্ড হাতে ভক্তরা ভিড় করেন স্টেডিয়াম চত্বরে।
কেউ এসেছেন ঘোড়ায় চড়ে, কেউ বাজনা নিয়ে, কেউ বা হামজার হেয়ার কাট নকল করে। এমনকি জাতীয় পতাকায় মোড়ানো শিশু-কিশোরদের দলও চোখে পড়ে। ঈদের ছুটির দিন হলেও উৎসবটা যেন ঈদের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছে।
মাঠে উপস্থিত সমর্থকদের উল্লাসের সঙ্গে তাল মিলিয়েই হাজির হয়েছেন তামিম। তার উপস্থিতি ভক্তদের উচ্ছ্বাস-উন্মাদনায় যেন যোগ করল নতুন মাত্রা।
খেলা দেখতে যারা মাঠে আসতে পারেননি, তাদের জন্যও ব্যবস্থা রয়েছে। টি স্পোর্টস ও বাফুফের উদ্যোগে দেশের আটটি স্থানে জায়ান্ট স্ক্রিনে ম্যাচ দেখানো হচ্ছে।
ঢাকার রবীন্দ্র সরোবর, চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও বরিশালের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসেছে সেই আয়োজন।
প্রসঙ্গত, এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের তৃতীয় রাউন্ডে ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত, হংকং ও সিঙ্গাপুর। ভারতের সঙ্গে ড্র করে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছে জামাল-হামজারা।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে সিঙ্গাপুরের থেকে বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে (১৮৩তম), তবে মাঠে লড়াইয়ে তারা পিছিয়ে নেই। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে কোচ কাবরেরার দলে রয়েছেন হামজা চৌধুরী, শোমিত সোম ও ফাহামিদুল ইসলাম। মাঝমাঠে শোমিত যোগ দেওয়ায় কাবরেরা নিজেই বলেছেন, ‘মধুর বিড়ম্বনায় পড়েছি।’
তবে মাঠের ভেতরের কৌশল আর প্রতিপক্ষ বিশ্লেষণের বাইরেও আজকের ম্যাচ ঘিরে এক নতুন বার্তা দিয়েছেন তামিম ইকবাল। তিনি ছাড়াও জাতীয় দলের পেসার খালিদ আহমেদ ও সাবেক পেসার রুবেল হোসেনসহ অনেক ক্রিকেটার তাদের সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশ ফুটবল দলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ফুটবল আর ক্রিকেট, দুটোই যদি সমান ভালোবাসা পায়, তাহলে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে হয়তো এক নতুন সূর্যোদয় অপেক্ষা করছে।
আপনার মতামত লিখুন :