শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে লজ্জাজনক হারের পরপরই বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
কলম্বো টেস্ট শুরুর আগে থেকেই শান্তর নেতৃত্ব ছাড়ার গুঞ্জন ছিল, যা আজকের ঘোষণার মধ্য দিয়ে সত্যি হলো।
আজ শনিবার (২৮ জুন) ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে শান্ত নিজেই এই ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, আমার একটা ঘোষণা ছিল, আমি বাংলাদেশ দলের টেস্ট অধিনায়কত্বের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিচ্ছি। আমি টেস্ট ফরম্যাটে আর অধিনায়কত্ব চালিয়ে যেতে চাই না।
দলের ভালোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শান্ত। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, আমি একটা জিনিস সবাইকে ক্লিয়ারলি মেসেজটা দিতে চাই যে, এটা কোনো পারসোনাল কিছু না।
এটা দলের ভালোর জন্যই এই সিদ্ধান্তটা নেওয়া এবং এটাতে দলের ভালো কিছু হবে বলে আমি মনে করি।
তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক থাকার বিষয়টি তার কাছে কঠিন মনে হয়েছে বলেও জানান শান্ত। তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত মতামত যে তিন অধিনায়ক একটু ডিফিকাল্ট হতে পারে। পুরোটা দলের ভালোর জন্য আমি এখান থেকে সরে এসেছি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ওয়ানডে ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব থেকেও নাজমুল হোসেন শান্তকে সরিয়ে দেয় বিসিবি। তার জায়গায় নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
এর আগে ব্যাটিংয়ে আরও মনোযোগী হওয়ার জন্য শান্ত নিজেই টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেসময় তিনি বোর্ডকে জানিয়েছিলেন, তিনি টেস্ট ও ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব দিতে চান।
তবে, বোর্ড সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল পরবর্তীতে দাবি করেন যে, শান্তর ওয়ানডে অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া হয়নি, বরং বোর্ডের সবার সম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
এবং শান্ত নিজেও খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতায় এটি মেনে নিয়েছিলেন। টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকে শান্তর এই পদত্যাগ বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুন নেতৃত্বের সন্ধানে আরও একবার প্রশ্ন তৈরি করলো।
টেস্ট অধিনায়কত্বের জয়-পরাজয়
নাজমুল হোসেন শান্তর টেস্ট অধিনায়কত্বের যাত্রা মিশ্র অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে। কিছু ভালো পারফরম্যান্স থাকলেও তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটে বেশ কিছু পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে।
বিশেষ করে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বর্তমান ইনিংস পরাজয় তার অধিনায়কত্বে আরেকটি হতাশার সংযোজন।
নাজমুল শান্তর অধীনে বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে ১৪টি। তার ভেতরে ৪টিতে জিতেছে দল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১টি, পাকিস্তানের বিপক্ষে ২টি আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১টি ম্যাচ জিতেছে দলটা।
এদিকে ওয়ানডে ফরম্যাটে ১৩ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জিতেছে ৪টি ম্যাচে।
তার অধিনায়কত্বের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জেতা। তবে, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড এবং সর্বশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হেরেছে।
আপনার মতামত লিখুন :