ভারতের বাংলাদেশ সফর ২০২৫ সালের আগস্টে হওয়ার কথা থাকলেও তা এক বছরের বেশি সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন সূচি অনুযায়ী, ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হবে এই সাদা বলের (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) সিরিজ।
এই পরিবর্তন শুধু খেলার সূচিতে নয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আর্থিক পরিকল্পনায়ও বিশাল প্রভাব ফেলেছে।
ভারত সিরিজ: বিসিবির আয়ের বড় উৎস
ঢাকা ও চট্টগ্রামে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি আয়োজনের কথা ছিল। সিরিজটি শুধু প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। বরং ছিল বিসিবির রাজস্ব আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস।
বিশেষ করে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার মতো তারকাদের টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার পর এটাই হতে যাচ্ছিল তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ—যা নিয়ে ছিল বিপুল আগ্রহ।
ভারত সিরিজ মানেই গ্যালারি পূর্ণ দর্শকে ভরা থাকে, টিকিট বিক্রি হয় হাতেগোনা দিনের মধ্যেই। সঙ্গে থাকে স্পনসরশিপ, প্রচারসংশ্লিষ্ট আয় ও সম্প্রচার স্বত্বের বাড়তি বাজারমূল্য।

এই সিরিজ স্থগিত হওয়ায় বিসিবি এমন একটি সময় বিশাল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলো, যখন তারা রাজনৈতিক অস্থিরতা পরবর্তী পরিস্থিতি সামলে উঠছে।
বিসিবি বনাম বিসিসিআই: আয় ও সম্পদের ব্যবধান
২০২২-২৩ অর্থবছরে বিসিবির আয় ছিল ৫,০৭৫ কোটি টাকা এবং ব্যয় ছিল ৩,৫৫৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বোর্ডের উদ্বৃত্ত ছিল ১,৫১৬ কোটি টাকা।
এর বড় অংশই এসেছে আইসিসি বরাদ্দ (১,৬৫৭ কোটি টাকা) এবং সম্প্রচার রাজস্ব (১,২৪৭ কোটি টাকা) থেকে। কিন্তু এই আর্থিক ছবি যতই ভালো দেখাক, ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের তুলনায় বিসিবি এখনও অনেক পিছিয়ে।
২০২৫ সালে বিসিসিআইয়ের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৮,৭৬০ কোটি রুপিতে। কেবল আইপিএল থেকেই তারা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫,৭৬১ কোটি রুপি উদ্বৃত্ত করেছে।
এমন আর্থিক ভিত্তিতে ভারতীয় বোর্ডের জন্য এক বা একাধিক সিরিজ বাতিল বা স্থগিত হওয়া বড় কোনো সমস্যা নয়। কিন্তু বিসিবির জন্য প্রতিটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, বিশেষ করে ভারতের বিপক্ষে খেলা, আর্থিক দিক থেকে জীবন-মরণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
২০২২ সালের সিরিজে টিকিট থেকে রেকর্ড আয়
ভারতের শেষ বাংলাদেশ সফর হয়েছিল ২০২২ সালে। সেই সময় টিকিটের মূল্য ছিল ২০০ থেকে ১,৫০০ টাকা পর্যন্ত (প্রায় ১৬০–১,২০০ রুপি)। গ্যালারিগুলো ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।
শুধু টিকিট বিক্রি নয়, স্পনসর ও ব্রডকাস্ট ডিল থেকেও বিসিবি রেকর্ড আয় করেছিল। সেই অনুপাতে ২০২৫ সালের সিরিজ থেকেও বিসিবি বিপুল পরিমাণ অর্থ আয়ের আশা করেছিল।
এদিকে ২০২৪ সালে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতার কারণে নানা খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্রিকেট, যা একটি স্থিতিশীল ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রচারযোগ্য খাত, এমন সংকট সময়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
ভারতের মতো দলের বিপক্ষে সিরিজের মাধ্যমে বিসিবি কেবল আয় নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রচারের মাধ্যমে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করার সুযোগ পেত।

 
                             
                                    


 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন