এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় ম্যাচে পূর্ব তিমুরকে ৮-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপ ‘এইচ’-এ নিজেদের শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল বাংলাদেশ। লাওস জাতীয় স্টেডিয়ামে শুক্রবার (৮ আগস্ট) অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছেন তৃষ্ণা রানী সরকার। এ ছাড়াও সাগরিকা, নবীরুন, শিখা, শান্তি ও মুনকি একটি করে গোল করেন।
দুই অর্ধেই সমান চারটি করে গোল করে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে ৩-১ গোলে হারানোর পর এটি তাদের টানা দ্বিতীয় জয়। দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট ও +১০ গোল পার্থক্য নিয়ে গ্রুপে শীর্ষে অবস্থান করছে পিটার জেমস বাটলারের শিষ্যরা।
প্রথমার্ধে কিছুটা সাবধানী শুরু করলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে নিজেদের ছন্দ খুঁজে পায় বাংলাদেশ। ম্যাচের ২০তম মিনিটে স্বপ্না রানীর কর্নার থেকে হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন সিনহা জাহান শিখা। এরপর ৩২ মিনিটে বাঁ দিক থেকে শান্তি মার্দির দুর্দান্ত বাঁকানো কর্নার কিক সরাসরি জালে প্রবেশ করে, যা একটি ‘অলিম্পিক গোল’ হিসেবে বিবেচিত।
৩৬ মিনিটে আরও একটি কর্নার থেকে গোল করেন নবীরুন খাতুন। এবারও কর্নার থেকে বল বাড়ান শান্তি, হেডে জাল খুঁজে নেন নবীরুন। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে শিখার কাটব্যাক থেকে সহজ গোল করেন তৃষ্ণা রানী।
বিরতির পরেও আগ্রাসী ফুটবল খেলে বাংলাদেশ। ৫৩ মিনিটে জয়নব বিবি রিতার একটি ক্রস ফিরতি বলে পেয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন তৃষ্ণা। ৭৩ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে কাটিয়ে গোল করেন মোসাম্মৎ সাগরিকা। এরপর ৮৩ মিনিটে সাগরিকার পাস থেকে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তৃষ্ণা।
যোগ করা সময়ের শেষ দিকে (৯০+৪ মিনিটে) ম্যাচের শেষ গোলটি করেন মুনকি আক্তার, ফলে ৮-০ গোলের বিশাল জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
ম্যাচের উল্লেখযোগ্য মুহূর্তসমূহ: তৃষ্ণার হ্যাটট্রিক করে ৪৫+৩’, ৫৩’, ৮৩ মিনিটে গোল করে ম্যাচসেরা পারফরম্যান্স দেন এই ফরোয়ার্ড। শান্তির অলিম্পিক গোল: কর্নার থেকে সরাসরি জালে বল জড়িয়ে দুর্দান্ত গোল করেন শান্তি মার্দি। তিনটি গোল কর্নার থেকে—প্রথমার্ধেই কর্নার থেকে আসে শিখা, নবীরুন ও শান্তির গোল। গোলরক্ষক স্বর্ণার দৃঢ়তা—প্রথমার্ধে দুটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ প্রতিহত করেন স্বর্ণা রানী মণ্ডল।
এই ম্যাচের আগে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ২৪ ধাপ এগিয়ে উঠে এসেছে ১০৪ নম্বরে। পূর্ব তিমুরের সঙ্গে ব্যবধান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ ধাপে। তাই বড় জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ, আর সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছে তারা দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে।
দুই ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ গ্রুপে শীর্ষে থাকলেও আগামী ১০ আগস্ট তাদের মুখোমুখি হতে হবে গ্রুপের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়ার। কোরিয়া এইচ গ্রুপের সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন, তাই বাংলাদেশকে এখন লক্ষ্য রাখতে হবে রানার্সআপ পজিশন ধরে রেখে সেরা তিন রানার্সআপের তালিকায় থাকা—এর মাধ্যমে তারা মূল পর্বে খেলার সুযোগ পেতে পারে।
পিটার বাটলারের শিষ্যরা এখন আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর
দুই ম্যাচে ১১ গোল করে এবং কেবল একটি গোল হজম করে বাংলাদেশের মেয়েরা প্রমাণ করেছেন, তারা এখন কেবল অংশগ্রহণের জন্য নয়, লড়াই করতেই মাঠে নামছে।
আগামী ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশের জন্য বড় প্রাপ্তি আত্মবিশ্বাস, দলগত সংহতি এবং একটি ঐক্যবদ্ধ পরিকল্পনা।
আপনার মতামত লিখুন :