রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শফিকুল ইসলাম খোকন, পাথরঘাটা (বরগুনা)

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৫, ০৭:৫৫ পিএম

বৃষ্টির মধ্যেই সড়কে পিচ ঢালাই!

শফিকুল ইসলাম খোকন, পাথরঘাটা (বরগুনা)

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৫, ০৭:৫৫ পিএম

বৃষ্টির মধ্যে পাথরঘাটায় চলছে পিচ ঢালাইয়ের কাজ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বৃষ্টির মধ্যে পাথরঘাটায় চলছে পিচ ঢালাইয়ের কাজ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বরগুনার পাথরঘাটায় গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে মুষলধারে বৃষ্টি। এ বৃষ্টিতে পথ-ঘাট ভিজে একাকার। সড়কের কোথাও কোথাও জমেছে পানি, কোথাও বৃষ্টিতে সড়কে দেওয়া সুরকি কাদায় পরিণত হয়েছে। 

আর এমন অবস্থায়ই উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের কাজের কার্পেটিং চলছে। বৃষ্টিতে সড়কে দেওয়া প্রাইম কোট ধুয়ে গেলেও সেদিকে সংশ্লিষ্টদের কোনো নজর নেই।

সরেজমিনে কাঠালতলী বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, শনিবার সকালে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে, ঠিক এমন সময় কাঠালতলী বাজার থেকে পরিঘাটা এলাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠনের লোকজন ছাতা মাথায় ধরে পিচ ঢালাইয়ের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমিকরাও কাজ চালু রেখেছেন। সড়কের পাশে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় সেগুলো বেলচার সাহায্যে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এরপর সেই স্থানেই পিচ ঢালাই দিচ্ছেন তারা। 

তাছাড়া সড়কে দেওয়া প্রাইম কোট বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে। সেখানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কোনো কর্মকর্তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এতে অল্প সময়ের মধ্যেই সড়কটি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বলে স্থানীয় সচেতন মহল দাবি করছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, নিয়ম মেনেই কাজ করছেন তারা।

উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নের কাঠালতলী বাজার থেকে পরিঘাটা পর্যন্ত গ্রামীণ সড়কটি ২ হাজার ২ শ মিটার সংস্কারের জন্য ২০২৩ সালে দরপত্রের আহবান করা হয়। এতে সিকদার ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১ কোটি ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৬৪৬ টাকার কাজটি পান।

বৃষ্টিতে সড়কটির অবস্থা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

এ কাজ শুরু করার কথা ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে এবং শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ সালে অক্টোবর মাসে। ওই সময়ের মধ্যে শেষ করতে না পারায় কাজের মেয়াদ বাড়ান ২০২৫ সালের মে মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত। কয়েক দফায় কাজের মেয়াদ বাড়ানোর পরেও শেষ না করে মুষলধারে বৃষ্টি মধ্যেই কাজ করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় মো. জয়নাল, জগদীস গোমস্তা, কমল ডাক্তারসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, সড়কটিতে শুরু থেকেই অনিয়ম করে আসছেন ঠিকাদারের লোকজন। সড়কটির দুপাশে (এজিন) এর অনেক অংশেই মাটি নেই এবং খোয়ায় নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে ঢালাইয়ের জন্য সড়কে প্রাইম কোট দেওয়া হয়। তবে তা বৃষ্টিতে ধুয়ে গেলেও নতুন করে আর প্রাইম কোট দেওয়া হয়নি। 

তাছাড়া গত এক সপ্তাহ ধরে মুষলধারে বৃষ্টির পরছে, এর মধ্যেই সড়কে পিচ ঢালাইয়ের (কার্পেটিং) কাজ হয়েছে। কাজের সময় এলজিইডি অফিসের কোনো লোকজন থাকে না, তাদের সহযোগিতায় এ কাজ করছে যাচ্ছে। এভাবে যদি অনিয়ম করে সড়কে কাজ করা হয় তাহলে সড়কটি বেশিদিন টিকবে না। এলাকাবাসী আপত্তি জানালেও তারা তাদের কথা শোনেননি। এভাবে নয়-ছয়ভাবে কাজ করলে জনসাধারণের সেই দুর্ভোগ রয়েই যাবে। সড়কটির দিকে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিৎ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়কের কর্মরত শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিন কাজ করলেই দিন শেষে টাকা পান। ঠিকাদারের লোকজন যেভাবে কাজ করতে বলেন সেরকমই করছেন, ভালো-মন্দ ঠিকাদারের বিষয়! 

বৃষ্টির মধ্যে এভাবেই করা হয় সড়কটির পিচ ঢালাইয়ের কাজ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ 

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিকদার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মনির জোমাদ্দার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, ‘যখন কাজ শুরু করেছি তখন কোন বৃষ্টি ছিলো না। পরে বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’

বৃষ্টির মধ্যে কাজ করা এবং কাজের শুরু থেকেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা কোনো অনিয়ম করছিনা, নিয়মের মধ্যেই শুরু থেকে কাজ করে আসছি।’

পাথরঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সমিরন মণ্ডল বলেন, কাঠালতলীতে যে কাজটি হচ্ছে- সেটি বিআরবি প্রকল্পের কাজ। গত ২ দিন আগে শুরু হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে কাজ করার কেন সুযোগ নেই। যেহেতু এখন বর্ষাকাল সেক্ষেত্রে আমরা সতর্কতার সহিত কাজ করছি। আমাদের লোক কাজের সাইটে যাওয়ার আগেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শুরু করেছে। যে মাল ফেলেছে তা উঠিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। 

কাজের শুরু থেকেই নিম্নমানের এবং এজিং এর পাশের অনেকাংশে কোনো মাটি নেই কেনো- এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, এটি অনেক আগের কাজ, আমি আসার পরে যেমন পেয়েছি তেমনই করছি। এর আগে কী হয়েছে- তা আমি বলতে পারব না। তবে বৃষ্টির মধ্যে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই, এব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Link copied!