ঢাকা রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

রুটের ব্যাটে ইতিহাসের পথে ইংল্যান্ডের ‘ব্যাটিং’ যাত্রা

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম
জো রুট। ছবি- সংগৃহীত

জো রুট—যার জন্ম হয়েছিল ইংল্যান্ডের শেফিল্ডে, যিনি হাসপাতাল থেকে বাবার হাতে বানানো কার্ডবোর্ড ব্যাট হাতে ফিরেছিলেন। আজ সে রুটই ব্যাট হাতে তাড়া করছেন ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল নামটিকে।

ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের আকাশ যেন কিছুটা থমকে গিয়েছিল। ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে থাকা জো রুট যথন নিজের ৩৮তম টেস্ট সেঞ্চুরি উদ্‌যাপন করছিলেন। গ্যালারির উল্লাস ছিলো স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি। কেন? কারণ রুট পেরিয়ে গেছেন রাহুল দ্রাবিড় ও জ্যাক ক্যালিসকে।

এরপর রিকি পন্টিংকেও পেছনে ফেলে এখন তিনি পৌঁছেছেন ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। এখন তার সামনে কেবল শচীন টেন্ডুলকার।

২০১২ সালের নাগপুর টেস্টে ভারতের বিপক্ষে যখন প্রথমবারের মতো টেস্ট ক্রিকেটে নামেন, সেই ম্যাচেই মাঠ ভাগ করে নিয়েছিলেন কিংবদন্তি শচীন তেন্ডুলকারের সঙ্গে।

সেটাই ছিল একমাত্র আন্তর্জাতিক ম্যাচ যেখানে রুট ও শচীন ছিলেন একই মাঠে। সেই সময় ৩৯ বছর বয়সী শচীনের বিদায় ছিল সময়ের ব্যাপার। আর তরুণ রুটের যাত্রা তখনই শুরু।

রুট তখন জানতেন না—তিনি এক অনন্য উচ্চতাকে অনুসরণ করছেন। আজ, ৩৪ বছর বয়সে এসে তা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ রান, সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি, সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা এবং সর্বাধিক ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড ইতোমধ্যেই তার দখলে।

রুটের গড় রান এখন প্রতি ম্যাচে ৫১-এর মত। সেই হিসেব অনুযায়ী, আর ৩০টি টেস্ট খেললে তিনি ছুঁয়ে ফেলবেন শচীনের ১৫,৯২১ রানের মাইলফলক।

কিন্তু বিষয়টি আরও রোমাঞ্চকর হয়, যখন দেখা যায় ২০২১ সাল থেকে রুট গড়ে ম্যাচপ্রতি ৯৩ রান করে যাচ্ছেন। গত ১৯ ম্যাচে সে হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০১-এ।

যদি এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে, তবে ২০২৭ সালে ওভালে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম টেস্টেই সম্ভব হতে পারে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ—শচীনকে টপকে বিশ্বের সর্বোচ্চ টেস্ট রানসংগ্রাহক হবেন জো রুট।

তবে এই পথে রুটের একটি অপূর্ণতা এখনও রয়ে গেছে—অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে শতকহীনতা। ১৪টি ইনিংস খেলে একবারও পৌঁছাতে পারেননি তিন অঙ্কে। এটি যে তার ব্যক্তিগত লক্ষ্য, তা তিনি নিজেই জানেন।

ইংল্যান্ডের আগামী দুই বছরের সূচি বলছে, সম্ভাব্য ২৬টি টেস্ট রয়েছে রুটের সামনে। ভারতের বিপক্ষে আরও একটি টেস্ট, এরপর অ্যাশেজে পাঁচটি, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে তিটিন করে এবং ২০২৬-২৭ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে মোট পাঁচটি টেস্ট। সঙ্গে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৫০তম বার্ষিকী টেস্ট।

অর্থাৎ সময় ও সুযোগ—দু’টিই রুটের অনুকূলে। শারীরিকভাবে সুস্থতা থাকলে এবং ফর্ম বজায় থাকলে রুটই হতে পারেন ইতিহাসের নতুন ‘লিটল মাস্টার’।