ঢাকা সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫

নারী ফুটবলে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার দুয়ার খুলল ইংল্যান্ড

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৪:১৯ পিএম
ইংল্যান্ড নারী ফুটবল দল। ছবি- সংগৃহীত

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে টানা শিরোপা জয়ের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের নারী ফুটবল দল ‘লায়নেসরা’ ইতিহাস গড়েছে। দেশের বাইরে বড় কোনো আন্তর্জাতিক ট্রফি জেতা প্রথম ইংলিশ সিনিয়র ফুটবল দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে তারা। 

শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও নেতৃত্ব, উদ্যম ও সামাজিক সচেতনতায় এই নারী খেলোয়াড়দের অবদান এখন উদাহরণ হয়ে উঠেছে।

দলের প্রধান কোচ সারিনা উইগম্যান পাঁচটি  ফাইনালে পৌঁছার বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে নেদারল্যান্ডসের কোচ হিসেবে ইউরো জয় ও বিশ্বকাপ ফাইনাল এবং ইংল্যান্ডের কোচ হিসেবে ইউরো শিরোপা। 

তাকে দলে আনার পেছনে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক টেকনিক্যাল ডিরেক্টর কায় কসিংটনের দূরদর্শিতা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মাঠে লায়নেসদের দৃঢ় মানসিকতা ও প্রত্যয় ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রতিযোগিতায় তিনবার পিছিয়ে থেকেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে তারা, এবং দুবার টাইব্রেকারে জয় ছিনিয়ে নিয়ে শিরোপা ধরে রেখেছে। 

এমন স্নায়ুচাপ জয় করে তারা শুধু খেলার মান বাড়াননি, প্রমাণ করেছে নারীরাও পারে সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্ব দেখাতে।

মাঠের বাইরেও এই নারী খেলোয়াড়রা ছিলেন সোচ্চার। স্কুলে মেয়েদের খেলার সমান সুযোগ, মাসিক স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য, অটিজম কিংবা বর্ণবৈষম্য—সব বিষয়ে তারা নিয়েছেন অবস্থান।

জেস কার্টারের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের প্রতিবাদ করেছেন প্রকাশ্যে। ফলে নতুন প্রজন্মের মেয়েদের জন্য তারা হয়ে উঠেছেন রোল মডেল।

ইংল্যান্ডের পুরুষ দলের মতো লায়নেসরাও প্রতিনিধিত্ব করছে আধুনিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এক ইংল্যান্ডের—তবে এইবার তা নারীর কণ্ঠে, নারীর পায়ে। 

তাই ইউরো জয়ের পর যখন ৬৫ হাজার দর্শক লন্ডনে তাদের বরণ করে নেয়, তখন সেটি কেবল জয় নয়, নারী খেলাধুলার নতুন জাগরণ।

এই জাগরণই এখন ব্যবসায়িক সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে নারীদের ফুটবল ভক্ত সংখ্যা ৮০০ মিলিয়ন ছাড়াবে, এমন পূর্বাভাস দিয়েছে নিসেন। 

তরুণ, বৈচিত্র্যময় ও সমাজসচেতন এই ফ্যানবেসকে লক্ষ্য করে ক্লাবগুলোর এখনই নতুন বিপণন কৌশল তৈরি করা জরুরি।

আর্সেনাল ইতোমধ্যে নারীদের দলে বিনিয়োগ করে সফলতার উদাহরণ তৈরি করেছে। তাদের বিক্রি হওয়া ১৫ হাজার সিজন টিকিট এবং ফুল হাউজ এমিরেটস স্টেডিয়াম প্রমাণ করে—যথাযথ প্রচার, বিনিয়োগ ও অভিজ্ঞতা দিলে নারী ফুটবলেও বিপুল দর্শক টান সম্ভব।

তবে এখনো অনেক ক্লাব নারীদের দিক উপেক্ষা করে পুরুষ ফুটবলের বিশাল আয়ের দিকেই মনোযোগী। কিন্তু সময় এসেছে নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা পূরণের।