ফুটবল ইতিহাসে ৪০০টি অফিসিয়াল গোলের মাইলফলক শুধুমাত্র সেরা গোলদাতাদের জন্য সংরক্ষিত। কিলিয়ান এমবাপ্পে, লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তিনজনই এই সংখ্যা অতিক্রম করেছেন, কিন্তু প্রত্যেকেই তা সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে করেছেন।
বয়স, কার্যকারিতা এবং দীর্ঘায়ু—প্রত্যেকটি দিক আলাদা করে দেখায় কে আসল ‘বিজয়ী’ এই গোল দৌড়ে।
এমবাপ্পে: সবচেয়ে কম বয়সে ৪০০ গোল
যদি বিচার করা হয় কেবল বয়সের ভিত্তিতে, এমবাপে স্পষ্টভাবে এগিয়ে আছেন। মাত্র ২৬ বছর ও ৩২৮ দিনে তিনি ৪০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে দুটি গুরুত্বপূর্ণ গোলের মাধ্যমে। এই ম্যাচে ফ্রান্সও ২০২৬ বিশ্বকাপের যোগ্যতা নিশ্চিত করে।
ক্লাব ও দেশের মধ্যে তার গোলের বন্টনও দেখায় তার ক্যারিয়ার কতটা দ্রুত এগোচ্ছে। মোনাকোর হয়ে ২৭টি, পিএসজিতে ২৫৬টি, রিয়াল মাদ্রিদে ৬২টি এবং ফ্রান্সের হয়ে ৫৫টি। এমবাপে মেসি ও রোনাল্ডোর চেয়ে কম বয়সে ৪০০ গোল করেছেন এবং প্রতিটি মঞ্চে—ডোমেস্টিক, ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক—প্রভাব বিস্তার করেছেন।
মেসি ৪০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন ২৭ বছর ও ৯৫ দিনে, রোনাল্ডো ২৮ বছর ও ৩৩৫ দিনে। এমবাপ্পে শুধু তাদের সময়সীমা পেরোছেন না, বরং সম্পূর্ণরূপে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন।
মেসি: সর্বনিম্ন ম্যাচে ৪০০ গোল
যেখানে বয়সের দিক থেকে এমবাপে এগিয়ে আছেন, সেখানে কার্যকারিতা বা ‘এফিশিয়েন্সি’-এর মুকুটে রাজা লিওনেল মেসি। মাত্র ৫২৫ ম্যাচে তিনি ৪০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন—এটি এই তিনজনের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম এবং আধুনিক ফুটবলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গোলের গতি।
মেসি এই সাফল্য অর্জন করেন সেপ্টেম্বরে ২০১৪, যখন বার্সেলোনা-নেইমার-সুয়ারেজ ত্রয়ী তার চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছিল। ৪০০ গোলের মধ্যে ৩৫৮টি বার্সেলোনার হয়ে, ৪২টি আর্জেন্টিনার হয়ে। এমবাপ্পে একই লক্ষ্যে পৌঁছাতে ৫৩৭টি ম্যাচ লাগে, আর রোনালদোর জন্য লাগে ৬৫২টি।
যদি বিচার হয় কার্যকারিতা—গোল করার ধারা ও নিয়মিতত্ব—মেসিই সেরা।
রোনালদো: দীর্ঘায়ুর রাজা
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ছিলেন এই তিনজনের মধ্যে শেষজন, কিন্তু তার সাফল্য একটি বিশেষ দিক বহন করে, তিনি দীর্ঘায়ু ধরে রেখেই শীর্ষে থাকা।
তিনি ৪০০ গোল স্পর্শ করেন জানুয়ারি ২০১৪-এ, রিয়াল মাদ্রিদের সময়, যেখানে ৩৫৩টি ক্লাব গোল এবং ৪৭টি জাতীয় দলের হয়ে। ৬৫২টি ম্যাচে তিনি ৪০০ গোল পূর্ণ করেন—মেসি ও এমবাপ্পের চেয়ে বেশি—কিন্তু যা পরবর্তীতে ঘটেছে, তা তাকে আলাদা করে।
৪০০-এর পরও ক্রিস্টিয়ানো থামেননি: ৫০০, ৬০০, ৭০০… এবং অবশেষে ৮৫০-এরও বেশি গোল। দীর্ঘায়ু ও ধারাবাহিকতা তাকে এই দিক থেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলেছে।
ফুটবলের এই তিন কিংবদন্তির পথে ভিন্নতা থাকলেও, ৪০০ গোলের মাইলফলক তাদের একসাথে কিংবদন্তির তালিকায় স্থায়ী করেছে।




