সম্প্রতি একটা লম্বা সময় ধরে রাজনৈতিক অচলাবস্থার পর অবশেষে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মধ্যপন্থী রাজনীতিক ফ্রাঙ্কোইস বায়রুর নাম ঘোষণা করেছেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার ১৩ ডিসেম্বর ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীর নামের ঘোষণা আসতে পারে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। অবশেষে সেই খবর সত্যি করে ফ্রাঙ্কোইস বায়রুকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট।
এর আগে ফ্রান্সের পার্লামেন্টে ঐতিহাসিক অনাস্থা ভোটে গত ৪ ডিসেম্বর ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ার। পরের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মাক্রোঁ নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হয়েছিল, কিন্তু সেদিন তিনি তা করেননি। এরপর মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর দলের নেতাদের বৈঠকে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে তাকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
মাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত ৭৩ বছর বয়সী বায়রু মধ্যপন্থী জোটের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। গত কয়েক দশক ধরে ফরাসি রাজনীতিতে তিনি সুপরিচিত নাম। তিনি দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একজন মেয়র এবং মধ্যপন্থী ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট (মোডেম) দলের শীর্ষ নেতা। ২০০৭ সালে তিনি নিজেই দলটি প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৯৩ থেকে ১৯৯৭ সালের মধ্যে রক্ষণশীল সরকারের শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে ফরাসি জনগণের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন এই রাজনীতিক। এরপর ২০০২, ২০০৭ ও ২০১২ সালে তিনবার দেশটির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন তিনি। পরে ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় মাক্রোঁকে সমর্থকন দেন বায়রু। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে মাক্রোঁ তাকে ফ্রান্সের বিচারমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিলেও পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের তহবিল তছরুপের অভিযোগে মোডেমের বিরুদ্ধে তদন্তের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করেন।
চলতি বছর প্যারিসের একটি আদালত ওই মামলায় মোডেমের ৮ কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত ও দলটিকে জরিমানা করলেও বায়রুকে নির্দোষ সাব্যস্ত করে অব্যাহতি দেয়। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনজন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন মাক্রোঁ। বাইরু হতে যাচ্ছেন তার চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী।
চলতি গ্রীষ্মে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। তারপর থেকেই দেশটির রাজনৈকিক অঙ্গনে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বায়রুর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বায়রুর কাজ হবে একটি নতুন সরকার গঠন করা। নতুন মন্ত্রী নির্বাচনে আগামী দিনগুলোতে তিনি বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন