জার্মানিতে তিন বছরের বসবাসের পর নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ বাতিল করতে যাচ্ছে দেশটির নবগঠিত সরকার। সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন এবং মধ্য-বামপন্থি সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি যৌথভাবে সরকার গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে এবং তাদের যৌথ নীতিমালায় নাগরিকত্ব আইন সংস্কারের এই সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
২০২১ সালে ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন জার্মান সরকারের আমলে, অভিবাসন নীতিকে আরও মানবিক করে তোলার অংশ হিসেবে নাগরিকত্ব আইনে বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়। সেই সংস্কারের আওতায় যারা জার্মান ভাষায় দক্ষ এবং সমাজে সফলভাবে একীভূত হয়েছেন- এমন অভিবাসীদের তিন বছর বসবাসের পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার সুযোগ ছিল।
রক্ষণশীল সরকারের সমালোচনা এবং পরিবর্তনের ঘোষণা
সিডিইউ/সিএসইউ এই নিয়মের তীব্র সমালোচনা করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরেই। তাদের মতে, মাত্র তিন বছরে নাগরিকত্ব পাওয়া মানে হচ্ছে দেশের মূল সংস্কৃতি, ইতিহাস ও আইন-কানুন সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জনের আগেই একজন অভিবাসী পূর্ণ নাগরিক হয়ে যাচ্ছেন, যা জাতীয় নিরাপত্তা ও সামাজিক সংহতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
নতুন সরকার সেই সমালোচনার প্রতিফলন ঘটিয়ে তিন বছরের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিধান বাতিলের উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে আগের মতো পাঁচ বছর জার্মানিতে বৈধভাবে বসবাসের পর নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ বহাল থাকবে।
দ্বৈত নাগরিকত্বের নিয়ম বহাল
সাবেক চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য সংস্কার ছিল দ্বৈত নাগরিকত্বের অনুমতি। এই নিয়ম অনুযায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ থেকে আগত অভিবাসীরাও চাইলে নিজ দেশের নাগরিকত্ব বজায় রেখেই জার্মান নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারতেন।
নতুন জোট সরকার দ্বৈত নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়ে শুরুতে আপত্তি জানালেও, সর্বশেষ আলোচনায় এই নিয়ম বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে করে দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার অভিবাসী কমিউনিটির মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
নাগরিকত্ব বাতিলের প্রস্তাব আর নেই আলোচনায়
নির্বাচনের সময় সিডিইউ/সিএসইউ-এর পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত, ইহুদিবিদ্বেষী বা উগ্রপন্থি মতাদর্শে বিশ্বাসী দ্বৈত নাগরিকদের নাগরিকত্ব বাতিল করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তবে এই প্রস্তাব এসপিডিসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সমালোচনার মুখে পড়ে। ফলে, সরকার গঠনের আলোচনায় বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি এবং নতুন জোট সরকার এই ধরনের কোনো বিধান অন্তর্ভুক্ত করছে না।
সমাজে একীভূতকরণই থাকবে মূল চাবিকাঠি
নতুন আইন অনুযায়ী, নাগরিকত্ব পেতে হলে এখনো অভিবাসীদের জার্মান ভাষায় দক্ষতা ও সমাজে কার্যকরভাবে একীভূত হওয়ার প্রমাণ দিতে হবে। তবে সেগুলো মূল্যায়ন করা হবে আরও গভীরভাবে এবং দীর্ঘ সময় ধরে একজন অভিবাসীর ভূমিকা বিশ্লেষণ করে।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন