ঢাকা শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান সেনাদের মধ্যে আবারও ব্যাপক গোলাগুলি

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২, ২০২৫, ১১:০২ এএম
সীমান্তের বেড়ার পাশে টহল দিচ্ছে সেনারা। ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ফের মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান।  টানা অষ্টম রাতেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে, যা দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতেও এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সূত্রে জানা গেছে, ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। 

তবে সীমান্তের নিরীহ মানুষ চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

গোলাগুলির অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ

ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, পাকিস্তান সেনারা বিনা উসকানিতে ছোট অস্ত্র ব্যবহার করে গুলি চালায়, যার লক্ষ্য ছিল কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, নওশেরা ও আখনুরের ভারতীয় পোস্টগুলো। 

পাল্টা জবাবে ভারতও সীমান্তজুড়ে গোলাবর্ষণ করে। তবে পাকিস্তান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি বা প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

পেহেলগাম হামলার পর রাজনৈতিক উত্তেজনা

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পেহেলগাম অঞ্চলে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত দাবি করে, এই হামলায় সীমান্তপারের সন্ত্রাসীরা জড়িত। পরদিনই দিল্লি একাধিক কঠোর পদক্ষেপ নেয়:

# সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে দেয় ভারত
# আতারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া হয়
# আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া হয়
# কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে আনা হয়

পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও:

# ভারতের উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে
# সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে
# এমনকি তৃতীয় দেশের মাধ্যমেও বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়

পাকিস্তান ভারতের পানি চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে আখ্যায়িত করে হুঁশিয়ারি দেয়।

আন্তর্জাতিক সীমান্তেও ছড়িয়েছে সংঘর্ষ

প্রথমে সংঘর্ষ সীমাবদ্ধ ছিল এলওসি-তে, তবে গত মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পাকিস্তানি সেনারা গোলাগুলির পরিসর আন্তর্জাতিক সীমান্ত পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়, বিশেষ করে জম্মুর পারগওয়াল সেক্টরে। 

এনডিটিভির মতে, এটি একটি নতুন এবং উদ্বেগজনক মোড়।

সামরিক পর্যায়ে হটলাইন যোগাযোগ

চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভারত ও পাকিস্তানের ডিজিএমও (সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক) পর্যায়ে হটলাইন সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। 

ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে বিনা উসকানির গুলি বন্ধ করার বিষয়ে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে বার্তা সংস্থা পিটিআই।

উদ্বেগ বাড়ছে, শান্তি কোথায়?

এই ক্রমাগত সংঘর্ষ ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে শান্তির সম্ভাবনাকে আরও দুর্বল করে তুলেছে। সাধারণ জনগণের জীবন বিপন্ন, কৃষিকাজ ও শিক্ষা কার্যক্রম থমকে গেছে। আন্তর্জাতিক মহলও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।