বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারত। বিশেষ করে সীমান্তঘেঁষা রেলপথ এবং স্টেশনগুলোর ওপর নজরদারি বাড়াতে শুরু হয়েছে বিএসএফ, আরপিএফ ও জিআরপি’র যৌথ টহল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’র এক প্রতিবেদনে শুক্রবার (২ মে) জানানো হয়, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের (এনএফআর) আওতাভুক্ত রেলপথে এই যৌথ অভিযান চালানো হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য, অবকাঠামো রক্ষা, যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান প্রতিরোধ।
যৌথ টহলের আওতায় কী থাকছে?
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে:
# সীমান্তবর্তী রেলপথে আরপিএফ, বিএসএফ ও জিআরপি’র সমন্বিত টহল
# রেললাইন, ব্রিজ, স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নজরদারি
# চুরি, ভাঙচুর, অনুপ্রবেশ বা নাশকতা চিহ্নিতকরণে তল্লাশি
# নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা প্রস্তুত, তা মূল্যায়নের প্রক্রিয়াও চলছে
এনএফআর-এর সূত্র বলছে, সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্টেশনে রেলওয়ের যন্ত্রপাতি চুরি, স্টেশন ভাঙচুর, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ঘোরাফেরা এবং সীমান্ত পার হয়ে অবৈধ প্রবেশের অভিযোগ বাড়ছে। এসবের প্রেক্ষিতে যৌথ টহলের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কেন এই বাড়তি সতর্কতা?
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত বছর বাংলাদেশে সরকারবিরোধী আন্দোলন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার পর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্টেশনগুলোতে বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেপ্তারের ঘটনা বেড়ে যায়।
এছাড়া রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের অভিযোগও নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে। সীমান্তবর্তী রেললাইনগুলোর মাধ্যমে এই ধরনের অবৈধ চলাচল রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত।
রেলওয়ে সম্পদ রক্ষায় আরও উদ্যোগ
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই যৌথ টহল ব্যবস্থার মাধ্যমে তারা শুধু সীমান্ত নিরাপত্তাই নয়, রেলওয়ের নিজস্ব সম্পদ, স্টেশন ও যাত্রী নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে চাইছে।
প্রতিদিন হাজারো যাত্রী যাতায়াত করেন এই অঞ্চলের ট্রেনগুলোতে। তাদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে, কারণ রেলপথ ও সীমান্ত মিলে এটি সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে চিহ্নিত।
রাজনীতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রভাব
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট এবং সীমান্তে পাচার রোধসহ একাধিক কারণে ভারত এই মুহূর্তে তার পূর্ব সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে রেলপথ ও জনবসতিপূর্ণ এলাকা ঘেঁষা সীমান্তজুড়ে।