ঢাকা রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫

আলজাজিরার তথ্যচিত্রে ফ্যাসিস্ট হাসিনার গুম-খুনের ভয়াবহ চিত্র

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৫, ০৯:১৫ এএম
শেখ হাসিনার শাসন নিয়ে এবার তথ্যচিত্র তৈরি করেছে আলজাজিরা। ছবি: সংগৃহীত

গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বড় গণঅভ্যুত্থান ঘটে। এতে বহু মানুষ নিহত হন। এরপর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যান। তারপর থেকেই তার দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতা গা ঢাকা দিয়েছেন, অনেকে গ্রেপ্তার হয়ে আছেন।

এই ঘটনার পর, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সংবাদমাধ্যম শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনকালের নানা অমানবিক কর্মকাণ্ড খুঁজে বের করতে শুরু করে। 

সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা একটি ৪৯ মিনিটের বিশেষ তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছে, যেখানে গুম, খুন, নির্যাতন, অর্থ পাচারসহ নানা অপরাধের চিত্র তুলে ধরা হয়।

তথ্যচিত্রে দেখা যায়, শেখ হাসিনার সময়ে অনেক মানুষ গুম হয়ে যান। তাদের পরিবার জানত না, তারা বেঁচে আছেন কি না। সাক্ষাৎকারে ভুক্তভোগীদের স্বজনরা বলেন, তারা এখনো অপেক্ষা করছেন প্রিয়জন ফিরে আসবে সেই আশায়।

তথ্যচিত্রে কথা বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি এখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, আইনজীবী ও গুম হওয়া ব্যক্তির স্বজনরা।

আলজাজিরায় দেখা যায়-

# অনেক গুম হওয়া ব্যক্তি ‘আয়না ঘর’ নামের এক গোপন কক্ষে বছরের পর বছর আটকে ছিলেন।
# এই ঘরগুলো চালাত দেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই।
# সেখানে হাত বেঁধে, চোখ ও মুখ ঢেকে রাখা হতো বন্দিদের। কারো সঙ্গে দেখা বা কথা বলার অনুমতি ছিল না।

তিনজন গুম হওয়া ব্যক্তি হুম্মাম কাদের চৌধুরী, আবদুল্লাহিল আমান আযমী ও ব্যারিস্টার আরমান পালানোর পর মুক্তি পান এবং তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন আলজাজিরায়।

তাদের মতে, তারা দিনের পর দিন অন্ধকার কক্ষে আটক ছিলেন। একজন বলেন, ‘আমি জানতাম না বাইরে দিন না রাত।’

আরও দেখা যায়, গুম হওয়া সাজেদুল ইসলামের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি একটি সংগঠন গঠন করেন যার নাম ‘মায়ের ডাক’। এটি এখন প্রায় ১ হাজার গুম হওয়া পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছে।

একজন লেখক রাজন ব্যাপারি বলেন, ‘তিনি খালেদা জিয়াকে নিয়ে একটি বই লেখার কারণে গুম হন। বন্দুকের মুখে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। দিনরাত নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়।’

তথ্যচিত্রে আর্থিক দুর্নীতির প্রসঙ্গও তুলে ধরা হয়। ড. আহসান এইচ মনসুর, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বলেন- শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাংক ডাকাতির ব্যবস্থা করেছিলেন। হাজার কোটি টাকা লোন দিয়ে সেই অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের তদন্ত দলও এসব অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে বলে তথ্যচিত্রে বলা হয়।