ভারতের সেনাবাহিনীর দাবি, তারা পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও দেশটির আরও কিছু এলাকায় অভিযান চালিয়ে শতাধিক জঙ্গিকে হত্যা করেছে। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাও রয়েছে।
রোববার (১১ মে) দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ভারতের সেনা কর্মকাণ্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ও প্রশিক্ষণ শিবিরে ভারত হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে লস্কর-ই-তৈয়বার একটি ঘাঁটিও ছিল।’
ভারত মনে করে, লস্কর-ই-তৈয়বা কাশ্মির ও ভারতের ভেতরে অনেক হামলার জন্য দায়ী। রাজীব ঘাই আরও বলেন, ‘আমরা তাদের প্রস্তুত হওয়ার আগেই আঘাত করেছি।’
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এখন খুবই খারাপ। গত ২২ এপ্রিল কাশ্মিরে সন্ত্রাসীদের হামলায় ২৬ পর্যটক মারা যান। ভারত পাকিস্তানকে এর জন্য দায়ী করে, তবে পাকিস্তান তা অস্বীকার করেছে। এরপর দুই দেশ একে অপরের কূটনীতিকদের বের করে দেয়। সীমান্ত ও আকাশপথও বন্ধ করে দেয়।
এরপর ৬ মে রাতে ভারত পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। পরিস্থিতি খারাপ হলে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে এবং ১০ মে যুদ্ধবিরতি হয়।
যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে বলা হয়েছে, দুই দেশই স্থল, জল ও আকাশপথে সেনা অভিযান বন্ধ রাখবে। তবে এরপরও সহিংসতা বন্ধ হয়নি। কাশ্মিরসহ কিছু এলাকায় আবার গোলাগুলি ও ড্রোন দেখা গেছে।
ঘাই জানান, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষে ৩৫ থেকে ৪০ জন পাকিস্তানি সেনা এবং পাঁচজন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, তাদের প্রতিরোধে ৪০-৫০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে।
ভারতের বিমানবাহিনী জানায়, পাকিস্তানের ড্রোন ও বিমান আটকানো হয়েছে এবং পাকিস্তানি বিমান ঘাঁটিতে পাল্টা হামলাও হয়েছে।
পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, তবে ভারত এ কথা নিশ্চিত করেনি। ভারতও বলেছে, তারা কয়েকটি পাকিস্তানি বিমান গুলি করে নামিয়েছে, তবে তারাও প্রমাণ দেখায়নি।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, তারা কারো দাবিই যাচাই করতে পারেনি।
কাশ্মিরের মানুষ এখনো ভয়ে আছে। কেউ কেউ বলেছেন, যুদ্ধবিরতির পর কিছুটা শান্তি এসেছিল, তবে এখন আবার গোলাগুলি শুরু হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির খবর সামাজিক মাধ্যমে জানান এবং পরে দুই দেশই তা নিশ্চিত করে। পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানায়, কিন্তু ভারত কিছু বলে না।
জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, এই যুদ্ধবিরতি দীর্ঘমেয়াদী শান্তির পথে যেতে সাহায্য করতে পারে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন। আশা করা হচ্ছে, সোমবার দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারা মুখোমুখি বৈঠকে বসবেন।
কাশ্মির নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধ বহু দিনের। দুই দেশই পুরো কাশ্মির নিজের বলে দাবি করে। এর আগে তারা দুবার কাশ্মির নিয়ে যুদ্ধ করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :