হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুদ্ধ-পরবর্তী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৯০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন অস্ত্র কেনার প্রস্তাব দিয়েছে ইউক্রেন। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
এই ঘোষণা আসে এমন সময়ে যখন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সমর্থনে বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি নিশ্চিত করেছে, যার মধ্যে প্যাট্রিয়ট মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের মতো উন্নত ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত।
এদিকে, ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেন সম্ভবত একটি আরও বড় চুক্তিতে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে ১০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন অস্ত্র ক্রয় এবং ৫০ বিলিয়ন ডলারের ড্রোন উৎপাদন চুক্তি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির পর ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদি মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এই চুক্তিগুলোর লক্ষ্য।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস আরও জানিয়েছে, এই বিশাল প্রতিরক্ষা ক্রয়ের অর্থায়ন মূলত ইউরোপীয় অংশীদারদের দ্বারা সমর্থিত হবে। বিনিময়ে তারা আশা করছে যে, ন্যাটো সদস্যপদ স্বল্পমেয়াদে সম্ভব না হলেও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দৃঢ় নিরাপত্তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে।
এর আগে সোমবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের মধ্যেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ফোনালাপ হয়। আলাপের পরই ট্রাম্প জানান, পুতিন দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে রাজি হয়েছেন।
তবে ট্রাম্প এও বলেন, বৈঠকের স্থান এখনো নির্ধারিত হয়নি। এই বৈঠকের পর ট্রাম্পকে যুক্ত করে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকও হওয়ার কথা রয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎসের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
জেলেনস্কির সঙ্গে দেড় ঘণ্টার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, যুদ্ধবিরতিই নয়, স্থায়ী শান্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি সম্ভব এবং নিকট ভবিষ্যতে বাস্তবায়নযোগ্য।
ট্রাম্প আরও বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে সরাসরি আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই আলোচনার মাধ্যমে সহিংসতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করা সম্ভব হবে।
তবে জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিক মের্ৎস ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে খানিকটা দ্বিমত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পরবর্তী বৈঠকে বসার আগে অন্তত যুদ্ধবিরতি থাকা জরুরি। আমরা রাশিয়াকে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য চাপ দিতে চাই।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন