নিজের জীবন উৎসর্গ করে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে এক বিরল দৃষ্টান্ত গড়লেন মিসরের এক যুবক। শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি মিনিবাস সিনাই নদীতে পড়ে গেলে তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে নিজে আর ফিরতে পারেননি তিনি।
রোববার (৩০ নভেম্বর) মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিজের জীবন উৎসর্গ করে অন্যদের বাঁচানোর জন্য মিসরজুড়ে হাসান আহমেদ গাজ্জার (২২) নামের তরুণ বীরকে নিয়ে শোক চলছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বহনকারী একটি মিনিবাসের টায়ার হঠাৎ ফেটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সিনাই নদীতে পড়ে যায়। এটা দেখে ২২ বছর বয়সি হাসান সঙ্গে সঙ্গেই পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সাঁতার না জানা সত্ত্বেও তিনি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ডুবন্ত বাসের পেছনের দরজা খুলে একে একে ১৩ ছাত্রীকে উদ্ধারে সহায়তা করেন। অত্যন্ত শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের কারণে সব ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারলেও শেষ পর্যন্ত হাসান দুর্ভাগ্যবশত নদীতে ডুবে যান। তার এই সাহসিকতার শেষ পরিণতি ছিল হৃদয়বিদারক।
প্রতিবেদেনে বলা হয়, মেনুফিয়া প্রদেশের মেনিয়েল দোয়েব গ্রামের বাসিন্দা হাসান সিনাই এলাকায় কাজের সন্ধানে গিয়ে এই দুর্ঘটনার মুখোমুখি হন। তার তিনটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
হাসানের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে একজন নায়ক হয়ে মারা গেল এবং আমি তার জন্য গর্বিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাসান সাঁতার না জনালেও নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে কোনো দ্বিধা করেনি।’
মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে হাসানের জন্মদিনের ঠিক দুই দিন আগে। তার বাবা জানান, এরই মধ্যে ছেলের জন্মদিনের জন্য কেকও প্রস্তুত করেছিলেন।
হাসানের বাবা আরও বলেন, ‘আমি আশা করব তাকে (হাসান) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে এবং তার সদ্য স্বামীহারা স্ত্রী ও তিন কন্যাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে—যারা কেবলই তাদের স্বামী ও বাবাকে হারিয়েছে।’
সারা বিশ্বের সোশাল মিডিয়া হাসানের এই মহান আত্মদানকে সমীহ করছে এবং তার সাহসের তারিফ করছে। বিশ্ব-সোশালে তিনি আজ এক বীর।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন