সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা ঘিরে ভারতের সামরিক বাহিনী পূর্ণাঙ্গ সামরিক মহড়া দেখিয়েছে। ‘যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির অংশ’ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে তিস্তা নদীর অববাহিকায়ও মহড়া করেছে দেশটির বাহিনী।
গত সপ্তাহে টানা তিন দিন (৮ থেমে ১০ মে) তিস্তা ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে ‘তিস্তা প্রহার’ নামে এ মহড়া চালানো হয়।
মহড়ার জায়গাটি ভারতের ‘চিকেনস নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডরের খুব কাছেই। উত্তর-পূর্ব ভারতকে বাকি দেশের সঙ্গে সংযুক্ত করা মাত্র ১৭ কিলোমিটার চওড়া সরু অংশটিকে ‘চিকেনস নেক’ বলা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) এক অনুষ্ঠানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র গুয়াহাটিতে বলেন, তিস্তা প্রহার মহড়ায় নদীবিধৌত অঞ্চলের চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে বাহিনীর ‘যৌথ কম্ব্যাট স্ট্র্যাটেজি’ এবং (যুদ্ধের) প্রস্তুতি দেখানো হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি দাবি করেন, এ মহড়ায় আরও একবার ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, ট্যাকটিক্যাল ড্রিল ও খুব দ্রুত অভিযান চালানোর ক্ষমতা দেখিয়েছে, যা তাদের উৎকর্ষ ও আধুনিকায়নের প্রমাণ।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ‘তিস্তা প্রহার’ ঘিরে যেসব ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে এ মহড়ায় আর্টিলারি ট্যাংক, হেলিকপ্টার, সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও অত্যাধুনিক ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।
দিল্লিতে সেনাবাহিনীর একটি সূত্র বিবিসি-কে বলেন, এ মহড়াকে ঠিক ‘রুটিন এক্সারসাইজ’ বলা যাবে না, কারণ তিস্তার অববাহিকায় এ মাপের সামরিক মহড়া কিন্তু সাম্প্রতিককালের মধ্যে কখনোই হয়নি।
লন্ডনভিত্তিক ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রিয়জিৎ দেব সরকার মনে করছেন, এই সামরিক মহড়ার মধ্যে দিয়ে ওই অঞ্চলের প্রতিবেশী দেশগুলোকে ভারত একটা বার্তা দিতে চেয়েছে।
বিবিসি-কে তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে একটা সূক্ষ্ণ প্ররোচনার উপাদানও হয়তো আছে, যেটা অবশ্যই বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে খুশি করবে না।’