পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে নারী ইউটিউবারকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ। এছাড়াও তার সহযোগী আরও পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে আইএসআইএসের কাছে তথ্য পাচার করতেন বলে দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ছয় জনের মধ্যে একজন নারী ইউটিউবার রয়েছেন। তিনি হরিয়ানার বাসিন্দা, নাম জ্যোতি মালহোত্রা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভ্রমণ সংক্রান্ত ভিডিও বানাতেন তিনি। এছাড়াও নয়াদিল্লির পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তা এহসান উর রহিম ওরফে দানিসের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা ছিল ওই নারীর। দানিসের উদ্যোগে ২০২৩ সালে ভিসা নিয়ে পাকিস্তানেও গিয়েছিলেন।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চলা ‘অপারেশন সিঁদুরের’ সময় থেকেই গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে আসছিলেন তারা।
গত মঙ্গলবার দানিসকে ‘অযাচিত’ বলে ভারত ত্যাগ করতে বাধ্য করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অভিযোগ, শুধু দানিস নয়, ‘পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স অপারেটিভ’ (পিআইও) বা গোয়েন্দা বিভাগের সঙ্গে যুক্ত আরও একাধিক জনের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে জ্যোতির।
হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে পাক এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তিনি। শাকির ওরফে রানা শাহবাজ নামে এক পাক এজেন্টের নম্বর ‘জাঠ রানধাওয়া’ নামে সেভ করা ছিল জ্যোতির ফোনে।
জ্যোতি ছাড়াও পাঞ্জাবের বাসিন্দা গুজালা নামে ৩২ বছরের এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছেন তদন্তকারীরা। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে গিয়েছিল এই যুবক। গুজালাকে পাকিস্তানে যাওয়ার ভিসা পাইয়ে দিয়েছিল এই দানিসই। এই গুজালার সঙ্গে দানিসের ঘনিষ্ঠতা বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে পৌঁছয়।
সেই অনুযায়ী দফায় দফায় ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পাঠানো হয় গুজালাকে। পাকিস্তান থেকে ফিরে আসার পর গত ২৩ এপ্রিল গুজালা তার বন্ধু বানু নাসরিনা ও আর এক মহিলাকে নিয়ে পাকিস্তান দূতাবাসে আসেন। দানিস তাদেরও পাকিস্তান যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।
এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন পাঞ্জাবের মালেরকোটলার ইয়ামিন মোহাম্মদ, হরিয়ানার কৈথালের দেবিন্দর সিং ধিলন, ইনি এক শিখ ছাত্রনেতা ও হরিয়ানার নুহের আরমান। তারা প্রত্যেকে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।
হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছেন, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের ফোন-সহ অন্যান্য ব্যবহৃত ডিভাইস ঘেটে দেখা হচ্ছে। কার কার সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখতেন, কী তথ্য আদান-প্রদান হতো, সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জ্যোতি ছাড়াও কৈথাল, পানিপথ, নুহ, চিকা গ্রাম থেকে আরও কিছু লোককে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে।