আন্তজার্তিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চার বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। শুক্রবার (৬ জুন) রয়টার্স ও টাইমস অব ইসরায়েলের অনলাইন প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা এবং আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধপরাধের একটি অভিযোগ অনুসন্ধানের জবাবে মার্কিন সরকার নজিরবিহীন এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, মার্কিন সরকার আইসিসির যে চার বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা সবাই নারী। তারা হলেন, উগান্ডার সোলোমি বালুঙ্গি বোসা, পেরুর লুজ ডেল কারমেন ইবানেজ কারানজা, বেনিনের রেইন অ্যাডিলেড সোফি আলাপিনি গানসো এবং স্লোভেনিয়ার বেটি হোলার।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে বলেছেন, চার বিচারক আমেরিকা ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্রদের বিরুদ্ধে আইসিসির ‘অবৈধ ও ভিত্তিহীন পদক্ষেপ নিতে’ সক্রিয়ভাবে ভূমিকা নিয়েছেন। আইসিসির ভেতরে রাজনীতি ঢুকে গেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও অভিযুক্ত করার জন্য ‘মিথ্যা দাবি’ করছে।
মার্কো রুবিও বলেন, বিপজ্জনক এ পদক্ষেপ ও ক্ষমতার অপব্যবহার যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলসহ মিত্রদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘন করছে।
তবে ট্রাম্পের প্রশাসনের এমন পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে আইসিসি। সংস্থাটি বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক বিচারিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা।
২০১৮ সাল থেকে আইসিসির বেঞ্চে রয়েছেন বিচারক বোসা ও ইবানেজ কারানজা। তারা ২০২০ সালে একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, যার মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধের একটি অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে সামনে আনা হয়।
রয়টার্স জানিয়েছে, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনলেও ২০২১ সাল থেকে আইসিসি অনুসন্ধানের বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়নি। পরিবর্তে আফগান সরকার ও তালেবানের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগের দিকে মনোযোগ দিয়েছে।
আইসিসির বিচারকরা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, প্রাক্তন প্রতিরক্ষা প্রধান ইয়াভ গ্যালান্ট ও হামাস নেতা ইব্রাহিম আল-মাসরির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। গাজায় যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে তারা পরোয়ানা জারি করেন।
এসব পদক্ষেপ আইসিসির প্রতি মার্কিন প্রশাসনের বৈরী মনোভাব বাড়িয়ে তোলে।
আপনার মতামত লিখুন :