গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ভারতে গেছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। গত শুক্রবার (৬ জুন) তিনি দিল্লিতে পৌঁছান এবং পরদিনই মায়ের সঙ্গে কোরবানির ঈদ উদযাপন করেন।
ভারতের নিরাপত্তা সংস্থা ও দিল্লিতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বুধবার (১১ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
যদিও সূত্রগুলো বলছে, মায়ের সঙ্গে ঈদ পালন করার জন্যই ভারতে এসেছেন জয়। তার এই সফর যতটা না রাজনৈতিক, তার থেকেও বেশি পারিবারিক।
ভারতে অবস্থানরত একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা জানিয়েছেন, জয় ও শেখ হাসিনা ঈদের সময়টুকু একসঙ্গে কাটাচ্ছেন। রাজনৈতিক আলোচনা কিছু হয়েছে বলেও তারা ধারণা করছেন, তবে এ সফরের উদ্দেশ্য মূলত পারিবারিক বলে জানান তারা।
জয় এখন ভারতে থাকলেও, তারও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। আওয়ামী লীগের সূত্রে জানা গেছে, জয় দীর্ঘ সময় ভারতে থাকার পরিকল্পনা করেননি। কলকাতায় যাওয়ার সম্ভাবনার কথাও শোনা গেলেও, এবার তার সেখানে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো।
এদিকে, শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে দিল্লিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কর্মরত। তবে জয় ও পুতুলের দেখা হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভারতের কোনো সরকারি কর্মকর্তা জয়ের ভারতে আসার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
তবে জয়ের ভারতে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, জয় মূলত তার মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে ভারতে এসেছেন। গত বছরের আগস্টে ভারতে আসার পর প্রথম দর্শনার্থী হিসেবে জয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন শেখ হাসিনা।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে পালিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। ওই সময় পালিয়ে যান আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মীও। যারা এখন বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এসবের মধ্যেই ছেলের সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন করেছেন পলাতক শেখ হাসিনা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে দলের নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলে ছেলের সঙ্গে ভারতে বসে ঈদ উদযাপন করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এদিকে,গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশে ঘটে যায় ভয়াবহ গণহত্যা। যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হয়েছে। হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে ভারতকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু এ ব্যাপারে নয়াদিল্লি এখনো কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আদালত শেখ হাসিনাকে ১৬ জুনের মধ্যে উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা ভারতে পালানোর পর দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ভারত পরিবেশ উত্তপ্ত করার চেষ্টা করে।