ইসরায়েলি হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১২ জুন) রাত ৩টায় আইআরজিসির সদর দপ্তরে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। ইরানি সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা তাসনিমের খবরে আরও বলা হয়, আইআরসির আরেক শীর্ষ কর্মকর্তা এবং দুজন পারমাণবিক বিজ্ঞানীও নিহত হয়েছেন। নিহত দুই পরমাণু বিজ্ঞানী হলেন মোহাম্মদ মেদহি তেহরানচি ও ফেরেইদুন আব্বাসি।
এছাড়া রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর একটি আবাসিক ভবনে চালানো হামলায় নারী ও শিশুসহ বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এছাড়া ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলি শামখানি হামলায় 'গুরুতর আহত' হয়েছেন বলে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম নূর নিউজ জানিয়েছে। তবে খামেনি সুস্থ আছেন, তাকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন ইরানি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র আবুল ফজল শেকারচি বলেছেন, এ হামলার জন্য 'চরম মূল্য' দিতে হবে ইসরায়েলকে।
ইসরায়েলের মিলিটারি স্টাফ অভ চিফ এয়াল জামির জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী 'দশ হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েন এবং সব সীমান্তে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।'
এদিকে হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইরানে ইসরায়েলের হামলা নিয়ে আলোচনা করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটন ডিসিতে স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ১১টায় জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আহ্বান করবেন।
তেহরানের পারমাণবিক অগ্রগতি নিয়ে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, সেই মুহূর্তে এই হামলা হলো।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, যতদিন প্রয়োজন, ততদিন চলবে এই সামরিক অভিযান।
একজন ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, 'এটি একদিনের আক্রমণ নয়।'
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ হামলার লক্ষ্য 'ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ও সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা।'
ইসরায়েলি সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন বলেছে, ইসরায়েল আশঙ্কা করছে, ইরানের পক্ষ থেকে এবার আগের যেকোনো হামলার চেয়ে ব্যাপক ও ধ্বংসাত্মক পাল্টা আঘাত আসবে। সেজন্য ইসরায়েল প্রস্তুত আছে।
এ হামলায় ইসরায়েলের প্রধান লক্ষ্য তিনটি—ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক সম্পদ ও ইরানি সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, এ হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত নয়, ইসরায়েল একাই এ হামলা চালিয়েছে।
ইরানি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তর আছে এমন সব এলাকাসহ তেহরানের বিভিন্ন স্থানে শুক্রবার ভোরে বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নাতাঞ্জ প্রদেশ ও পশ্চিমাঞ্চলের শহর খোররমাবাদেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। নাতাঞ্জে ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনা রয়েছে, আর খোররমাবাদে আছে একটি বৃহৎ মিসাইল ঘাঁটি।
আল জাজিরার তেহরান প্রতিবেদক তহিদ আসাদি জানিয়েছেন, রাজধানীতে তারা স্থানীয় সময় রাত ৩টার দিকে বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :