ইরানের টোম্বাক বন্দরের আশেপাশে নৌযান চলাচলের সময় ট্র্যাকিং পর্যবেক্ষণের দৃশ্য ধরা পড়ছে। এতে দেখা গেছে, অনেকগুলো জাহাজ স্থলভাগে গোলাকৃতি সারিতে অবস্থান করে আছে। এছাড়া বন্দরের উপকূল এলাকাতেও একই ধরনের দৃশ্য দেখা গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি জিপিএস ‘সংকেত বিকৃতি’ বা ‘সংকেত বিপর্যয়’-এর ছায়াময় কৌশল।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুদ্ধের পদ্ধতি বদলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ‘সংকেত বিপর্যয়’ বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কী এই জিপিএস ‘সংকেত বিপর্যয়’?
এ ধরনের বিপর্যয় সাধারণত দুইভাবে ঘটে- একটিকে বলা হয় ‘সংকেত দমন’ এবং অন্যটি ‘মিথ্যা সংকেত পাঠানো’।
‘সংকেত দমন’ এমন এক প্রক্রিয়া- যেটা দ্বারা নৌযান বা বিমানের অবস্থান নির্ণায়ক যন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া যায়।
‘মিথ্যা সংকেত পাঠানো’র এমন এক প্রক্রিয়া- যেটা দ্বারা জাহাজ বা বিমানকে ভুল তথ্য পাঠানো হয়, যেন জাহাজ বা বিমান প্রকৃত অবস্থান ভুলে অন্য স্থানে গিয়ে অবস্থান করতে পারে।
কেন ঘটছে এমন বিপর্যয়?
বিমান বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোনকে সঠিক লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে বাধা দেওয়ার কৌশল হিসেবে জিপিএস ‘সংকেত বিকৃতি’ বা ‘সংকেত বিপর্যয়’ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। পাশাপাশি, শত্রুদের জাহাজ কিংবা অন্য লক্ষ্যবস্তুর সঠিক অবস্থান ভুলাতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
টোম্বাক বন্দরের ‘জিপিএস ট্র্যাকিং’-এর পেছনে কে?
টোম্বাক বন্দরের এই সংকেত বিপর্যয়ের পেছনে কে রয়েছে, তা নিয়ে বিশ্লেষক মহল এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার পর থেকেই উপসাগরীয় অঞ্চলে এমন বিপর্যয় ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
বিশ্বখ্যাত নৌ-পরিবহন বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান উইন্ডওয়ার্ড জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরু থেকেই উপসাগরীয় অঞ্চলে প্রায় এক হাজারেরও বেশি নৌযান এই ‘সংকেত বিপর্যয়’-এর সমস্যা পড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু সামরিক পরিস্থিতি নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক নৌযান চলাচল এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যও বড় ধরনের হুমকি তৈরি করছে।
আপনার মতামত লিখুন :