ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫

এক ইসরায়েলি সেনার গুলিতে প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন ৫ ফিলিস্তিনি

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৫, ০৮:৪৪ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

কোনো হুমকি ছাড়াই ত্রাণ নিতে আসা নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এ ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে ইসরায়েলের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম হারেৎজ-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে।

এতে দাবি করা হয়েছে, অভিযানে অংশ নেওয়া সেনা সদস্যরাই এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন।

হারেৎজের-এর ওই প্রতিবেদনে এক ইসরায়েলি সেনাসদস্যের ভাষ্য তুলে ধরে বলা হয়, ‘প্রতিদিনই আমার দায়িত্বাধীন এলাকায় গুলিতে গড়ে পাঁচজন ফিলিস্তিনি মারা যাচ্ছেন। ভিড় সামলানোর মতো ছোট বিষয়েও গুলি চালাতে বলা হয়েছে। অথচ সহজেই তা গুলি ছাড়া নিয়ন্ত্রণ করা যেত। এটা নিঃসন্দেহে হত্যাকাণ্ড।’

ইসরায়েলি ওই সেনা সদস্য আরও বলেন, ‘আমরা আর গাজায় যুদ্ধ করতে চাই না। এটি এমন এক জায়গা হয়ে উঠেছে, যেখানে মানুষের জীবনের কোনো দামই নেই!’

ফিলিস্তিনের গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ৪ হাজারেরও বেশি।

বিশেষ করে ২৭ মে থেকে জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তা কেন্দ্র এবং ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে এসব হামলার ঘটনা ঘটে।

হারেৎজের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এই সেনা অভিযানগুলোর রয়েছে একটি সাংকেতিক নাম- ‘অপারেশন সল্টেড ফিশ’। এটি শিশুদের খেলার মতো একটি রূপক নামে চালানো হচ্ছে।

ইসরায়েলি সেনারা বলেন, মর্টার শেল, ট্যাংক এবং মেশিনগান পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছে ত্রাণ নিতে আসা নিরস্ত্র মানুষদের বিরুদ্ধে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ তদন্ত ইউনিট ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং অ্যাসেসমেন্ট মেকানিজম’ এসব ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তে এসেছে ডিভিশন ২৫২-এর নাম, যার নেতৃত্বে আছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইহুদা ভাখ।

হারেৎজ জানায়, তিনি জাতিসংঘের ত্রাণ ট্রাকের পাশে জড়ো হওয়া বেসামরিক মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর নির্দেশ দেন।

তবে সেনাদের বক্তব্য অনুযায়ী, এসব তদন্ত কার্যত অর্থহীন। এক আইনি সূত্র হারেৎজকে বলেন, ‘প্রতিদিন এখানে ডজন ডজন মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু কোনো প্রকৃত তদন্ত নেই, কোনো দায়বদ্ধতাও নেই।’