ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫

‘চীনা গুপ্তচর’ অভিযোগে সাবেক মেয়রের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৫, ০৫:২৫ পিএম
বামবান শহরের মেয়র গুও। ছবি- সংগৃহীত

চীনের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে ফিলিপাইনের সাবেক মেয়র এলিস গুও দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার আদালত এলিস গুওসহ আরও তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ লাখ পেসো (প্রায় ৩৩,৮০০ ডলার) জরিমানা করে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, গুওকে ঘিরে ফিলিপাইনে বহুদিন ধরে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্ক চলছিল। তার ছোট্ট শহর বামবান-এ দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতারণা কেন্দ্র উন্মোচন হয়। সেখানে অভিযান চালিয়ে ৮০০ ফিলিপিনো ও বিদেশি নাগরিককে উদ্ধার করা হয়, যাদের অনেকেই জানান যে তারা জোরপূর্বক ‘পিগ বাচারিং’ নামে অনলাইনে প্রতারণা করতে বাধ্য হতেন।

তবে ৩৫ বছর বয়সি গুও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি আপিল করবেন কি না, তা এখনো জানা যায়নি। এ মামলার বাইরে তার বিরুদ্ধে আরও পাঁচটি মামলা চলছে, যার মধ্যে একটি অর্থপাচার সংক্রান্ত।

২০২২ সালে এলিস গুও রাজধানী ম্যানিলার উত্তরের শহর বামবানের মেয়র নির্বাচিত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তখন তাকে সহানুভূতিশীল ও যত্নশীল নেতা হিসেবে দেখতেন। কিন্তু ২০২৪ সালে পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে বদলে যায়। তিনি অনলাইনে জুয়ার আড়ালে পরিচালিত ফিলিপাইন অনলাইন গেমিং অপারেশনস (পোগো) নামের প্রতিষ্ঠানের আড়ালে বিশাল এক প্রতারণা কেন্দ্র চালাচ্ছিলেন।

এসব পোগো মূলত চীনা মূল ভূখণ্ডের গ্রাহকদের লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়।

গুও প্রথমে ওই বিষয়ে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু তদন্তে দেখা যায়, তার অফিসের কাছেই ৮ হেক্টর এলাকাজুড়ে ৩৬টি ভবন নিয়ে গঠিত ওই কমপাউন্ডটি নির্মিত হয়েছে। আরও জানা যায়, ওই জমিটির মালিক আগে থেকেই গুওই ছিলেন।

তদন্তে তার ব্যক্তিগত তথ্যেও অসংগতি পাওয়া যায়।

তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি ফিলিপাইনে জন্মেছেন, কিন্তু পরে জানা যায় তিনি কিশোর বয়সে পরিবারসহ চীন থেকে এসেছেন। তার আঙুলের ছাপও মিলে যায় গুও হুয়া পিং নামের এক চীনা নাগরিকের সঙ্গে।

ফলে তাকে মেয়রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং তদন্তে উন্নয়ন হতে থাকলে তিনি জুলাই ২০২৪-এ নিখোঁজ হয়ে যান। পরবর্তী মাসগুলোতে চার দেশের সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক অভিযান চালানো হয়। সেই অভিযানে ইন্দোনেশিয়া থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ তাকে গ্রেপ্তার করে ফিলিপাইনে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর তার ফিলিপাইন পাসপোর্ট বাতিল করা হয়।

তবে মামলাটি ফিলিপাইনে ব্যাপক আলোচিত হলেও চীন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।