পাক-ভারত যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ট্রাম্প বরাবর দাবি করে আসছে মার্কিন নির্দেশে ভারত যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি জানায়। এস জয়শঙ্কর সেই দাবির বিরোধিতা করেছেন এবং বলেছেন মার্কিন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নয় বরং পাকিস্তানে হামলার কারণে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানানোয় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত।
মার্কিন ম্যাগাজিন নিউজউইককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সাথে ফোনে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হননি বরং পাকিস্তানের যেকোনো আক্রমণের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমি আপনাকে বলতে পারি যে, ৯ মে রাতে যখন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স প্রধানমন্ত্রী মোদির সাথে কথা বলেছিলেন, তখন আমি সেই ঘরে ছিলাম, যেখানে তিনি বলেছিলেন যে, পাকিস্তানিরা ভারতের ওপর খুব বড় আক্রমণ চালাবে... আমরা কিছু জিনিস মেনে নিইনি এবং প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানিরা যা করার হুমকি দিচ্ছিল সে সম্পর্কে অজ্ঞ ছিলেন। বিপরীতে, তিনি (প্রধানমন্ত্রী মোদি) ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, আমাদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে’।
পরের দিন সকালে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফোন করে বলেন যে, ‘পাকিস্তানিরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত’ জয়শঙ্কর বলেন।
পরের দিন, পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ তার ভারতীয় প্রতিপক্ষের সাথে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানান, জয়শঙ্কর বলেন।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘তাহলে, আমি কেবল আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি কী ঘটেছে’।
তখন থেকেই মার্কিন ট্রেসিডেন্ট মিথ্যা দাবি করে আসছে যে মে মাসে ভারত ও পাকিস্তান যখন যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল, তখন ট্রাম্পের হস্তক্ষেপই ভারত ও পাকিস্তানকে যুদ্ধবিরতিতে নিয়ে এসেছিল। তারা বলেছে যে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা উভয় পক্ষকে শান্তি স্থাপনের জন্য উৎসাহিত করেছিল।
ভারতের দাবি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ওপর হামলাই দেশটিকে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করতে বাধ্য করেছিল যা ভারত মেনে নিয়েছিল।
৬-৭ মে, ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করে। ৬ এবং ৭ মে মধ্যরাতে ভারত পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা চালায়। পরের দিন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভারতীয় সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় হামলার জবাব দিলে, ভারতও পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায়, যার মধ্যে বিমানঘাঁটি, বিমান প্রতিরক্ষা স্থাপনা এবং রাডার স্থাপনা অন্তর্ভুক্ত ছিল। চার দিন ধরে চলা এই হামলার ফলে পাকিস্তান ১০ মে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করে।
আপনার মতামত লিখুন :