গত মাসের ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের অন্তত পাঁচটি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে বলে দাবি করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষণা গোষ্ঠীর স্যাটেলাইট রাডার তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষকদের বরাতে দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, ছয়টি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলে অবস্থিত সামরিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানে। এর মধ্যে রয়েছে একটি প্রধান বিমান ঘাঁটি, একটি গোয়েন্দা স্থাপনা এবং একটি সরবরাহ কেন্দ্র।
ওরেগন স্টেট গবেষণা দলের সদস্য কোরি শের বলেন, ‘আমরা যে রাডার স্বাক্ষর বিশ্লেষণ করেছি, তাতে পাঁচটি পৃথক সামরিক স্থাপনায় বিস্ফোরণের চিহ্ন স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। এটি যুদ্ধকালীন সময়ে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
তবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এ হামলার বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
একজন সামরিক মুখপাত্র দ্য টেলিগ্রাফ-কে বলেন, ‘আমরা শুধু এটুকুই বলতে পারি, পুরো অভিযানজুড়ে আমাদের সব ইউনিট কার্যকর অবস্থানে ছিল।’
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, রাডার চিত্রে দেখা ক্ষেপণাস্ত্র হামলাগুলোর অবস্থান আবাসিক এবং শিল্প এলাকায় আগে রিপোর্ট করা ৩৬টি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত থেকে আলাদা।
দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, যুদ্ধের সময় ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অতিক্রমের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সংঘাতের শুরুতে যেখানে এ হার ছিল মাত্র ২ শতাংশ, সপ্তম দিনে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৬ শতাংশে।
একজন ইরানি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন এক সঙ্গে ব্যবহার করেছি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করতে।
এদিকে ইসরায়েলি এক সামরিক কর্মকর্তা দেশটির সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যুদ্ধের শুরুতে ইরান প্রায় ৪০০টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে। এর মধ্যে ২০০টিরও বেশি ইসরায়েল ধ্বংস করতে সক্ষম হয়, যা ইরানি হামলায় কিছুটা বাধা সৃষ্টি করেছিল।
ওই কর্মকর্তার ধারণা অনুযায়ী, ইরান সংঘাতে অংশ নেওয়ার আগে ২,০০০ থেকে ২,৫০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত রেখেছিল এবং বর্তমানে আরও ব্যাপকভাবে উৎপাদনের চেষ্টা করছে।