রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ০৫:১৪ এএম

২০৩০ সালে কাবুল হবে প্রথম আধুনিক ‘পানিশূন্য’ শহর

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ০৫:১৪ এএম

ছবি- আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স

ছবি- আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স

সারাদিন ধরে কতটা পানি অপচয় করেন আপনি। উত্তর যদি দিতে না পারেন তাহলে হয়তো হাসির ছলে উড়িয়ে দেবেন। তবে বিশ্বের এই দেশের সামনে পানি নিয়ে এবার তৈরি হতে চলেছে বিরাট বিপদ।

কাবুলের নাম আমরা সকলেই শুনেছি। কাবুলিয়াওলা গল্পের সঙ্গে আমরা পরিচিত। এই গল্পটি প্রতিটা মানুষের মনে মিথ হয়ে রয়েছে। আর এবার সেই কাবুলেই শেষ হতে চলেছে পানির ভান্ডার। কাবুলে বর্তমানে ৭০ লাখের বেশি মানুষ বাস করেন। এটি বিশ্বের প্রথম দেশ হবে যেখানে আর পানি পাওয়া যাবে না।

এই তথ্য সামনে আসতেই সেখানে বিরাট হইচই পড়ে গিয়েছে। আফগানিস্তার রাজধানীতে মাটির নিচের পানি একেবারে শেষের দিকে। যেভাবে বিশ্বে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে সেখানে ২০৩০ সালেই কাবুলের মাটি থেকে আর পানি উঠবে না।

গবেষকরা মনে করছেন কাবুল থেকেই এই সমস্যা শুরু হতে চলেছে। এবার বিশ্বের বাকি দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন, কাবুল হতে পারে প্রথম আধুনিক শহর, যেখানে সম্পূর্ণ পানিশূন্যতা দেখা দেবে।

এনজিও মার্সি কর্পসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, দ্রুত নগরায়ণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত দশকে কাবুলের জলাধারের মধ্যে পানির স্তর ৩০ মিটার পর্যন্ত কমে গেছে। ইতোমধ্যে, শহরের প্রায় অর্ধেক বোরহোল (কাবুলের বাসিন্দাদের জন্য পানীয় পানির প্রাথমিক উৎস) শুকিয়ে গেছে। বর্তমানে প্রতি বছর প্রাকৃতিক রিচার্জ হারের চেয়ে ৪৪ মিলিয়ন ঘনমিটার পানি উত্তোলন করা হচ্ছে।

যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যেই কাবুলের সমস্ত জলাধার শুকিয়ে যাবে, যা শহরের ৭০ লাখ বাসিন্দার জন্য অস্তিত্বের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

প্রতিবেদনে পানি দূষণকে আরেকটি ব্যাপক চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। কাবুলের ভূগর্ভস্থ পানির ৮০ শতাংশ পর্যন্ত অনিরাপদ বলে মনে করা হচ্ছে, যেখানে উচ্চ মাত্রার পয়ঃনিষ্কাশন, লবণাক্ততা ও ভয়ংকর আর্সেনিক রয়েছে। এই পানি পান করা প্রায় মৃত্যুর সমান।

কাবুলের মানুষের জন্য পানির সরবরাহ একটি নিত্যদিনের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। কিছু পরিবার তাদের আয়ের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত পানিতে ব্যয় করে এবং দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি পরিবার পানি সম্পর্কিত ঋণের বোঝায় ভোগে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কাবুলে ২০০১ সালে যেখানে ১ মিলিয়ন মানুষ ছিল, সেখানে এখন ৭ মিলিয়ন হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে পানির চাহিদা বেড়েছে। ক্রমাগত মাটির নিচ থেকে যত্রতত্র পানি তোলা হয়েছে। যে পরিমানে মাটি থেকে পানি তোলা হয়েছে তেমনভাবে পানি মাটিতে প্রবেশ করেনি। 

কাবুলে বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার নলকূপ রয়েছে। সেখানকার বেশিরভাগ জায়গা থেকে পানি উঠছে না। ২০২৩ সালের ইউএন রিপোর্ট থেকেই দেখা গিয়েছিল কাবুলের প্রায় ৪৯ শতাংশ এলাকায় পানি নেই।

২০২৫ সালের গোড়ার দিকে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস ঘোষণা করে যে, আফগানিস্তানে পরিকল্পিত পানি ও স্যানিটেশন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ২৬৪ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে তাদের অংশীদাররা মাত্র ৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে।

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে আন্তর্জাতিক পানি ও স্যানিটেশন তহবিলের আরও ৩ বিলিয়ন ডলার স্থগিত করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএআইডি তহবিলের ৮০ শতাংশেরও বেশি হ্রাস করার সাম্প্রতিক পদক্ষেপ সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে।

কাবুলের মেয়র জানিয়েছেন এখানে ধনি এবং গরিবের মধ্যে ভেদাভেদ এতটাই তীব্র যে তার ফায়দা তুলছে একশ্রেণির মানুষ। তারা এবার পানি নিয়ে শুরু করে কালোবাজারি। ফলে গরিবরা আগামীদিনে হয়তো পানি না খেয়ে মারা যেতে পারে। বড়লোকের ঘরেই হয়তো ঢুকবে পানির ড্রামগুলো।

Shera Lather
Link copied!