পশ্চিমা শক্তিগুলোকে টেক্কা দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় বিমানবাহী রণতরী (মুগেম) নির্মাণ কাজ শুরু করেছে তুরস্ক। এটি হবে ২৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ৬০ হাজার টন ওজনের এক বিশাল জাহাজ। আকার ও ক্ষমতায় এটি বর্তমান ফ্ল্যাগশিপ টিসিজি আনাদোলুকে ছাড়িয়ে যাবে।
নতুন জাহাজটি মূলত তুরস্কের ক্রমবর্ধমান মানববিহীন বিমানবাহিনীর জন্য ভাসমান ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে। ইস্তাম্বুল শিপইয়ার্ড কমান্ড এই নির্মাণের ঘোষণা দেয়। তারা বলছে, এটি তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প ও নৌ-সক্ষমতায় নতুন এক অধ্যায়।
শিপইয়ার্ডের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল রিসেপ এরডিঙ্ক ইয়েতকিন বলেন, ‘আমরা জাতীয় বিমানবাহী রণতরী নির্মাণ শুরু করেছি। এটি হবে ২৮৫ মিটার দীর্ঘ, ৬০ হাজার টনের। তুলনায় আনাদোলু ছিল ২৩০ মিটার, ২৭ হাজার টনের।’
প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ২০২৭-২৮ সালের মধ্যে এটি চালু করতে চাই। পাঁচ বছরের মধ্যে ডেলিভারি দেওয়া হবে। আমরা ২০৩০ পর্যন্ত অপেক্ষা করব না।’
জাহাজটি ডিজাইনের সময় টিসিজি আনাদোলু প্রকল্পের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হচ্ছে। আকার ও সক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি যুক্ত হচ্ছে।
নতুন রণতরী মূলত ড্রোন পরিচালনায় সক্ষম হবে। এটি কিজিলেলমা, টিবি৩, আঙ্কা এবং টিবি২ চালাতে পারবে। ফলে এটি শুধু প্রচলিত ক্যারিয়ার নয়, বরং মানববিহীন যুদ্ধবিমানের ভাসমান ঘাঁটিতে রূপ নেবে।
এ লক্ষ্যে সমুদ্র পরীক্ষা শুরুর আগে বিশেষায়িত পরীক্ষামূলক ফ্লাইট র্যাম্প তৈরি করা হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই র্যাম্প প্রস্তুত হবে। সেখানেই স্থানীয় কোম্পানি বেকার ও টিএআই স্থলভিত্তিক পরীক্ষামূলক ফ্লাইট চালাবে।
ইয়েতকিন বলেন, ‘৯০-এর দশকে আমি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত পুরোনো জাহাজে দায়িত্ব পালন করেছি। তখন কোনো জাতীয় ব্যবস্থা ছিল না। গত ২০ বছরে আমরা নিজস্ব প্রকৌশল সক্ষমতায় উন্নত কমান্ড কন্ট্রোল, রাডার ও ফায়ার কন্ট্রোল ব্যবস্থা একীভূত করেছি।’
তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক মহলে এটি ‘করভেট বিপ্লব’ হিসেবে পরিচিত। মিলগেম প্রকল্পগুলো তুর্কি প্রতিরক্ষা শিল্পকে এগিয়ে নিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে।
ইয়েতকিন জোর দিয়ে বলেন, ‘প্রতিটি জাহাজ কার্যকর চাহিদার ভিত্তিতেই তৈরি হয়। এতে বিপুল খরচ ও শ্রম বিনিয়োগ হয়। তাই চূড়ান্ত পণ্য অবশ্যই আমাদের কৌশলগত প্রয়োজন মেটাতে হবে।’
সূত্র: তুর্কিয়ে টুডে



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন