যুদ্ধবিরতির পর ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য দেশটিতে পশ্চিমাদের সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব নাকচ করেছে রাশিয়া। পাশাপাশি সাময়িক যুদ্ধবিরতি নয়, স্থায়ী শান্তিচুক্তি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটি। এ সময় ইউক্রেনে মোতায়েন হওয়া বিদেশি সেনারা তাদের ‘আইনগতভাবে’ হামলার লক্ষ্যবস্তু বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেছেন পশ্চিমা নেতারা। বৈঠক শেষে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, যুদ্ধ শেষে ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য সেখানে সেনা মোতায়েনে রাজি হয়েছে ২৬টি দেশ। এ বৈঠকের একদিন পর শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধ শেষে ইউক্রেনের নিরাপত্তা দিতে আগ্রহ দেখানো দেশগুলোকে একত্রে ‘কোয়ালিশন অব উইলিং’ বলা হয়। বৃহস্পতিবার ‘কোয়ালিশন অব উইলিং’ র ৩৫ নেতা জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন। ইউরোপের বড় দেশগুলো ছাড়াও তাঁদের মধ্যে ছিলেন কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের নেতারা।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাখোঁ বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা হিসেবে দেশটিতে সেনা মোতায়েনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ২৬টি দেশ। তবে দেশগুলোর নাম উল্লেখ করেননি তিনি। নিরাপত্তার নিশ্চয়তার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীকে পুনরায় গড়ে তোলা এবং শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে বলে জানান ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের নিরাপত্তার প্রচেষ্টায় জার্মানি ও অন্যান্য দেশ যুক্ত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে বার্লিন বলেছে, সেনা মোতায়েনের বিষয়ে যখন শর্তগুলো পরিষ্কার করা হবে, তখনই কেবল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তারা। একটি শর্ত হলো ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কী পরিমাণ যুক্ত থাকবে।
এদিকে বৃহস্পতিবারের বৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোন করেন জেলেনস্কি। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুসারে, রাশিয়ার জ্বালানি তেল না কিনতে ইউরোপীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। তেল বিক্রির মাধ্যমে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে রাশিয়া তহবিল সংগ্রহ করছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, রাশিয়ার যুদ্ধে তহবিল সরবরাহের জন্য চীনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ দিতে ইউরোপের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান ট্রাম্প। এ বিষয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাখোঁ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাশিয়ার তেল ও গ্যাস খাত এবং চীনের ওপর ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবে কোয়ালিশন অব উইলিং ও যুক্তরাষ্ট্র।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন