ইসলামি প্রজাতন্ত্র কখনোই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধের জন্য চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনাও ইরানের জন্য সম্পূর্ণ অকার্যকর এবং তাতে ক্ষতি ছাড়া কোনো সুফল নেই। সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
খামেনির এ মন্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন ইউরোপীয় শক্তিগুলো ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুনরায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে তেহরানের শীর্ষ কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইউরোপীয় নেতারা। তবে কোনো সমঝোতার ইঙ্গিত মেলেনি।
খামেনি বলেন, ‘আমরা নতি স্বীকার করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। এ বিষয়ে কিংবা অন্য কোনো বিষয়ে চাপের কাছে আমরা কখনোই আত্মসমর্পণ করব না।’
তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আলোচনায় বসা মানেই ক্ষতির মুখে পড়া। গত ১০ বছরের অভিজ্ঞতা আমাদের সামনে রয়েছে। অপরপক্ষ সবসময় প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে, মিথ্যা বলেছে, প্রতারণা করেছে এবং সুযোগ পেলেই সামরিক হুমকি দিয়েছে। এমন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা যায় না। মার্কিনিদের সঙ্গে পারমাণবিক ইস্যুতে অন্য যেকোনো আলোচনাও একেবারে অকার্যকর।’
ইউরোপীয় দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। তবে তেহরান তা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে আসছে এবং বলছে, তাদের কর্মসূচি কেবল শান্তিপূর্ণ জ্বালানি উৎপাদনের জন্য।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াদেফুল নিউইয়র্কে বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র পাবে না। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের আগে কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছানোর সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।’
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এসব নিষেধাজ্ঞাকে ‘অন্যায্য ও অবৈধ’ বলে অভিহিত করেছে। তবে তারা জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
গত জুনে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালায়। এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালায়।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিতে গিয়ে ট্রাম্প দাবি করেন, মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে। তিনি বলেন, ‘আমার অবস্থান খুবই পরিষ্কার—বিশ্বের ১ নম্বর সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষককে কখনোই সবচেয়ে মারাত্মক অস্ত্রের মালিক হতে দেওয়া যাবে না।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন