ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর এলাতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইয়েমেন। এতে অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছে দেশটির উদ্ধারকর্মীরা। গাজায় ইসরায়েলের চলমান গণহত্যার মধ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বুধবার লোহিত সাগরের উপকূলীয় এলাত এলাকায় ড্রোনটি আঘাত হানে। এ সময় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেটিকে ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে টেলিগ্রামে জানানো হয়েছে, ‘জনগণকে অনুরোধ করা হচ্ছে হোম ফ্রন্ট কমান্ডের নির্দেশনা মেনে চলতে এবং নতুন নির্দেশনার প্রতি সতর্ক থাকতে।’
হামলার দায় স্বীকার করে দেশটির হুথি বিদ্রোহীদের মুখপাত্র ইয়াহইয়া সারি বলেছেন, ‘একাধিক ড্রোন ব্যবহার করে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং এটি সফলভাবে লক্ষ্যে পৌঁছেছে। আমরা উম্ম আল-রাশরাশ ও বির আল-সাবা (বর্তমানে বিয়ারশেবা নামে পরিচিত) এলাকায় ইসরায়েলি শত্রুর কয়েকটি স্থানে আঘাত হেনেছি।’ গত সপ্তাহেও সেখানে একটি ড্রোন আঘাত হেনেছিল। তখনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়নি।
ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড আদম জানিয়েছে, হামলায় দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। বাকিদের আঘাত মাঝারি ও হালকা। পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়কারী দল ঘটনাস্থল পরীক্ষা করছে। জনগণকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে ধ্বংসাবশেষের কাছে না যায় এবং কোনো অংশ স্পর্শ না করে।
প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘ইসরায়েলের শহরে যেকোনো হামলার জবাব হুথি শাসনব্যবস্থাকে বেদনাদায়ক আঘাতের মাধ্যমে দেওয়া হবে।’ তিনি সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন নতুনভাবে প্রতিক্রিয়ার পরিকল্পনা করতে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজও হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘হুথিরা ‘কঠিন শিক্ষা’ পাবে। তারা সাতগুণ ক্ষতির শিকার হবে।’
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় হামলা শুরুর পর থেকে হুথিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে। এ ছাড়া তারা লোহিত সাগরে ইসরায়েল-সংযুক্ত জাহাজগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে, যার ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে বিঘ্ন ঘটেছে। হুথিদের দাবি, গাজায় যুদ্ধবিরতি হলেই তারা এসব হামলা বন্ধ করবে।
জাতিসংঘের এক তদন্ত কমিশন গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ইতোমধ্যেই ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদিকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ইসরায়েল ইয়েমেনেও অসংখ্যবার হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে রাজধানী সানাও রয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন