রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে ভারত। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাতে সায় দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বরাতে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, মোদি তাকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, ভারত খুব শিগগিরই রুশ তেল কেনা বন্ধ করবে। তিনি এটিকে ‘বড় সিদ্ধান্ত’ বলেও উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বরাবরই ভারতের রুশ তেল কেনাকে বাণিজ্যিক চাপের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। কিন্তু নয়াদিল্লি তা মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল এতদিন। ফলে দুই দেশের সম্পর্কে সম্প্রতি কিছুটা টানাপোড়েন দেখা দেয়।
রাশিয়ার সবচেয়ে বড় রপ্তানি পণ্য হচ্ছে তেল ও গ্যাস। আর এর প্রধান ক্রেতা হচ্ছে চীন, ভারত ও তুরস্ক। বুধবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘এখন আমাকে চীনকেও একই কাজ করাতে হবে।’
মূলত ট্রাম্প প্রশাসন বেইজিংসহ আরও কয়েকটি বাণিজ্যিক অংশীদারকেও রুশ তেল কেনা বন্ধ করতে চাপ দিয়ে যাচ্ছে, যাতে মস্কোর জ্বালানি খাত থেকে যুদ্ধের অর্থায়ন বন্ধ করা যায়। তবে ট্রাম্প স্বীকার করেন, ভারত হঠাৎ করে রুশ তেল কেনা বন্ধ করতে পারবে না। তার ভাষায়, ‘এটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া, কিন্তু খুব দ্রুতই শেষ হবে।’
এদিকে রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যেই ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। গত আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া মার্কিন এই শুল্ক হার সারা বিশ্বের সর্বোচ্চ শুল্কগুলোর মধ্যে একটি।
তবে মোদি তার অবস্থানে অটল থেকেছেন। তার দাবি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত নিরপেক্ষ অবস্থানে আছে, যদিও মস্কোর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে ভারতের।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ভারতের অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে রুশ তেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নয়াদিল্লি দীর্ঘদিন ধরে সস্তায় রুশ তেল কিনে আসছে। এ ছাড়া রুশ তেল নিয়ে এই বিরোধ ট্রাম্প ও মোদির সম্পর্কেও প্রভাব ফেলেছে। যদিও বুধবার (১৫ অক্টোবর) ট্রাম্প আবারও মোদির প্রশংসা করে বলেন, ‘তিনি একজন মহান মানুষ।’
এর আগে গত সপ্তাহে মোদি জানিয়েছিলেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তারা ‘দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছেন’।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন