জেন–জি আন্দোলনের মুখে প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু রাজোয়েলিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কয়েক দিনের মাথায় মাদাগাস্কারের সামরিক বাহিনীর একজন কর্নেল দেশের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। আফ্রিকার এই দ্বীপরাষ্ট্রের উচ্চ সাংবিধানিক আদালত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এক অনুষ্ঠানে কর্নেল মাইকেল রান্দ্রিয়ানিরিনাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধতা দেন। এ শপথের মাধ্যমে আন্ড্রু রাজোয়েলিনার পলায়ন, তাঁকে অভিশংসন এবং সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের মতো অস্থির এক সপ্তাহের সমাপ্তি ঘটল।
শপথ নিয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি সম্পূর্ণ ন্যায়পরায়ণ ও দায়িত্বশীলভাবে মাদাগাস্কারের রাষ্ট্রপতি হিসেবে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবো। ৫১ বছর বয়সী মাদাগাস্কারের এই সেনাশাসক আগামী ১৮ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনে বেসামরিক নেতৃত্বকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে।
তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনার রাজনৈতিক শিবির এই ক্ষমতা হস্তান্তরকে ‘অবৈধ ও অসাংবিধানিক’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। তাদের দাবি, এটি দেশের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করবে। তাদের মতে, রাজোয়েলিনা এখনও বৈধ নেতা এবং তিনি চলমান সংকটের রাজনৈতিক সমাধান খুঁজছেন।
২০২০ সাল থেকে মালি, বুরকিনা ফাসো, নাইজার, গ্যাবন ও গিনির পর সর্বশেষ ফরাসি উপনিবেশ মাদাগাস্কারে সামরিক অভ্যুত্থান হলো। এখন সেখানে সামরিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হলো।
১৯৬০ সালে ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা লাভের পর মাদাগাস্কারে এটি তৃতীয় সামরিক ক্ষমতা হস্তান্তর। এর আগে ১৯৭২ ও ২০০৯ সালেও অভ্যুত্থান হয়েছিল।
প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ ও সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য থাকা সত্ত্বেও মাদাগাস্কার বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র। বিশ্বব্যাংকের মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষই দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করেন।
রাজোয়েলিনার পলায়ন মাদাগাস্কারের রাষ্ট্রপ্রধানের ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়ার তৃতীয় ঘটনা। এর আগে ডিডিয়ের রাতসিরাকা ২০০২ সালে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার পর ফ্রান্সে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া ২০০৯ সালে মার্ক রাভালোমানানা দক্ষিণ আফ্রিকায় পালিয়ে যান।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন