সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ০৫:০৬ পিএম

জাপানে ট্রাম্পকে রাজকীয় অভ্যর্থনা, চীনে বাণিজ্য যুদ্ধবিরতির আশা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ০৫:০৬ পিএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।   ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাজকীয় অভ্যর্থনা দিয়েছে জাপান। এশিয়া সফরের শেষ পর্ব হিসেবে সোমবাররের (২৭ অক্টোবর) এই সফরকে ঘিরে রয়েছে বহুমাত্রিক কূটনৈতিক প্রত্যাশা, বিশেষত চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধবিরতির চুক্তি। গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই ট্রাম্পের দীর্ঘতম বিদেশ সফর।

সফরের শুরুতে তিনি মালয়েশিয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চারটি দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার চুক্তি ঘোষণা করেন। এরপর বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে তার।

হোয়াইট হাউস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির আলোচকরা রোববার শুল্ক বৃদ্ধি ও চীনের বিরল মৃত্তিকা (রেয়ার আর্থ) রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ স্থগিতের একটি কাঠামোতে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। এই খবরে এশিয়ার শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন ঘটেছে। টোকিওতে অবতরণের আগে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট শিকে আমি গভীরভাবে সম্মান করি। আমি আশাবাদী, আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে যাচ্ছি।’

সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সাক্ষাৎ

জাপানের রাজধানী টোকিওতে পৌঁছে সোনালি টাই ও নীল স্যুট পরিহিত ট্রাম্পকে দেখা যায় কর্মকর্তাদের সঙ্গে করমর্দন করতে। এরপর তিনি হেলিকপ্টারে চড়ে টোকিওর রাজপ্রাসাদে যান, যেখানে সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে তার আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ হয়।

জাপানের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সানে তাকাইচির সঙ্গে বৈঠকের আগে ট্রাম্প ইতোমধ্যেই ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। তাকাইচি মার্কিন পিকআপ ট্রাক, সয়াবিন ও প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার ঘোষণা দিতে পারেন বলে জাপানি সূত্র জানিয়েছে। পাশাপাশি জাহাজ নির্মাণ খাতে একটি নতুন চুক্তি ঘোষণারও সম্ভাবনা রয়েছে।

গত সপ্তাহে জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া তাকাইচি ট্রাম্পকে টেলিফোনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-জাপান জোটকে আরও শক্তিশালী করাই তার ‘শীর্ষ অগ্রাধিকার’। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাকাইচির সঙ্গে দেখা করার জন্য অধীর। তিনি আমার প্রয়াত বন্ধু ও গল্ফ পার্টনার শিনজো আবের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। আমি মনে করি, তিনি দুর্দান্ত হতে যাচ্ছেন।’

নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও কূটনীতির সমন্বয়

টোকিওতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। হাজার হাজার পুলিশ মোতায়েন রয়েছে, শুক্রবার মার্কিন দূতাবাসের বাইরে একজন ছুরিধারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এবং শহরের শিনজুকু এলাকায় ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক ও জাপানি প্রতিপক্ষ রিওসেই আকাজাওয়া সোমবার এক কর্মদিবসের মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তাদের নতুন জাপানি প্রতিপক্ষ সাতসুকি কাটায়ামার সঙ্গে প্রথমবার বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।

২০১৯ সালে সিংহাসনে আরোহনের পর সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা প্রথম বিদেশি নেতা ছিলেন ট্রাম্প। তবে এবার মূল কূটনৈতিক আলাপ হবে প্রধানমন্ত্রী তাকাইচির সঙ্গে আকাসাকা প্রাসাদে। সেখানেই তাকে সামরিক সম্মান জানিয়ে স্বাগত জানানো হবে। দুই দেশ জাহাজ নির্মাণে বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করবে বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে।

প্রতিরক্ষা ব্যয়ে চাপ ও আঞ্চলিক বার্তা

জাপান মার্কিন সামরিক ঘাঁটির সবচেয়ে বড় আয়োজক দেশ। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন, টোকিও চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তির মুখে যথেষ্ট ব্যয় করছে না। তাকাইচি সংসদে ঘোষণা দিয়েছেন, প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ২ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করবেন। তবে ট্রাম্পের প্রত্যাশিত আরও বড় বৃদ্ধি পেতে হলে তাঁকে সংসদে রাজনৈতিক লড়াই মোকাবিলা করতে হবে, কারণ তার জোটের এখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।

বুধবার ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়ংজু শহরে যাবেন, যেখানে তার সঙ্গে বৈঠক করবেন রাষ্ট্রপতি লি জে মিয়ং। ট্রেজারি সেক্রেটারি বেসেন্ট জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গেও একটি প্রাথমিক বাণিজ্য কাঠামো তৈরি হয়েছে, যদিও তা এই সপ্তাহে চূড়ান্ত হবে না।

বৃহস্পতিবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ওয়াশিংটন ও বেইজিং একে অপরের রপ্তানির ওপর শুল্ক বাড়ানো এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও প্রযুক্তি বাণিজ্য সীমিত করার হুমকি দেওয়ার পর এই সাক্ষাৎকে ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে।

দুই দেশই আশাবাদী, অন্তত বাণিজ্য সম্পর্কের অবনতি ঠেকাতে কিছুটা অগ্রগতি হবে। তবে ট্রাম্পের চীন সফর না হওয়া পর্যন্ত মূল চুক্তির সম্ভাবনা কম। আলোচনায় আপাতত জোর দেওয়া হচ্ছে মতবিরোধ নিয়ন্ত্রণ ও আস্থা পুনর্গঠনে—যা ভবিষ্যৎ বৈঠকের জন্য ভূমিকা তৈরি করবে।

সূত্র: রয়টার্স

Link copied!